পূর্ব বর্ধমান: আর কয়েকদিন। তারপরই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election)। তার আগে পদ্মশিবিরে অব্যাহত কলহ। একের পর এক নেতার পদত্যাগ কমিটি থেকে। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান সদর জেলার সহসভাপতি শ্যামল রায় পদ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার পর এবার জেলা সভাপতির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার প্রতিবাদে পূর্ব বর্ধমান বিজেপির সদর জেলার কর্মকর্তা পদত্যাগ করলেন।
গত সোমবার সহ সভাপতি শ্যামল রায় পদত্যাগ করেন। তিনি পূর্ব বর্ধমান সদর জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা ও বর্ধমান দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ আহলুওয়ালিয়ার নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে সরব হন। এরপর বুধবার দলের ৬ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করায় দল যে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় তা কার্যত মেনে নিলেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। সদর জেলার মুখপাত্র সৌম্যরাজ ব্যানার্জী বলেন,”দলের মধ্যে বা কারো বিরুদ্ধে অভিমান বা অভিযোগ থাকতেই পারে। সেটা বাইরে না বলে দলের অভ্যন্তরে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো উচিত।” তবে তিনি হাবেভাবে স্বীকার করেন পঞ্চায়েত ভোটের আগে এরকম ঘটনা দলের মধ্যে সমস্যা হবে।
বুধবার বিজেপি সদর জেলার আদিবাসী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক ও রাজ্য কমিটির তপশিলি মোর্চার সদস্য রাজু পাত্র,সদর জেলার ৩২ নম্বর জেডপির অঞ্চল সভাপতি প্রফুল্ল ঘোষ,৩২ নম্বর জেডপির শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখ গৌতম ঘোষ,সদর জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ মণ্ডল, সদর জেলার ৩২ নম্বর জেডপির ২০৮ নম্বর বুথ সভাপতি রানা দাস ও ৩২ নম্বর জেডপির তফসিলি জাতি কমিটির সভাপতি শিবু মালিক পদত্যাগ পত্র জমা দেন সামাজিক মাধ্যমে।
রাজু পাত্র সদর জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা এর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বলেন, “দলে কোনও সম্মান নেই। সভাপতি আমাদের কথা শোনেন না ৷ তফসিলি জাতির কোনও সম্মান নেই। তাই সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে আমরা পদত্যাগ করলান। আমরা এই পদত্যাগ পত্র রাজ্য সভাপতি ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পাঠিয়েছি।” একই দাবি করেন প্রদীপ মণ্ডলও।
উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমানে জেলা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। ২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের কোন্দল চরম জায়গায় পৌঁছয়। জেলা বিজেপির ঘোড়দৌড় চটির কার্যালয়ে ভাঙচুরও হয় দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর জায়গায় নতুন সভাপতি করা হয় অভিজিৎ তা কে। তাতেও গোষ্ঠী কোন্দলের রাশ টানতে কার্যত ব্যর্থ হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
মাস চারেক আগে বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়ে সন্দীপ নন্দীকে পুনরায় সভাপতি পদে ফিরিয়ে আনার দাবিতে। ধারাবাহিক গোলমালের নতুন সংযোজন শ্যামল রায়ের পদত্যাগের পাশাপাশি বুধবার ৬ কর্মকর্তার পদত্যাগ।
যদিও, বিষয়টি নজর এড়ায়নি বিরোধীদের। এই নিয়ে কটাক্ষ করেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বলেন,”বিজেপিতে এটাই হওয়ার কথা ছিল। তাই হচ্ছে।”