পূর্ব বর্ধমান: পুলিশের খাতায় মাওবাদী হিসাবেই পরিচিতি অর্ণব দামের। তবে মেধায় অর্ণব টেক্কা দিতে পারে অনেককেই। এবার সেই অর্ণব পিএইচডি করবেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পিএইচডি করার ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন তিনি। মেধাতালিকায় প্রথম নামই তাঁর। অর্ণবের এই সাফল্য ইতিহাস গড়ল।
ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ডিগ্রি পেয়েছেন অর্ণব দাম। এরপর নিয়ম মেনেই পিএইচডির আবেদন করেন তিনি। সম্প্রতি ইন্টারভিউ দেন। তারই ফল প্রকাশ হল শুক্রবার। সকলকে চমকে দিয়ে সেখানে প্রথম নামই অর্ণব দাম।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের ছেলে অর্ণব ছোট থেকেই মেধাবী। খড়গপুর আইআইটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেন। সেই কোর্স শেষ করার আগেই আচমকা একদিন উধাও হয়ে যান। ১৯৯৮ সাল নাগাদ জানা যায় মাওবাদী সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন। তখন তিনি বিক্রম, কিষেণজির বড় স্নেহের পাত্র। লালগড় আন্দোলন, শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় নাম জড়ায় অর্ণবের।
শিলদাকাণ্ডে যাবজ্জীবন হয় তাঁর। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সাজা ঘোষণার পর প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রাখা হয় তাঁকে। তারপর গত ১৭ মার্চ থেকে ঠিকানা হুগলি জেলা সংশোধনাগার। সেখান থেকেই পিএইচডি করতে চেয়ে আবেদন করেন। পিএইচডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেওয়া ২৫০ জনের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করেছেন অর্ণব। তাঁর এই রেজাল্ট বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে নতুন ইতিহাস তৈরি করল বলে মনে করছেন অনেকে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান সইদ তনভীর নাসরিন জানান, “ইতিহাস নিয়ে পিএইচডির জন্য নেওয়া ইন্টারভিউয়ের রেজাল্ট শুক্রবার প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির আসন সংখ্যা ৯টি হলেও ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন ২৫০ জন। সফলদের তালিকায় অর্ণব দামের নাম রয়েছে এক নম্বরে।” আর অর্ণবের এই সাফল্য প্রসঙ্গে সইদ তনভীর নাসরিনের ব্যাখ্যা, “শুধু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই বিষয়টি মডেল।” গত ২৬ জুন ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি’র জন্য ইন্টারভিউ দেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ইন্টারভিউ নেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের নামকরা অধ্যাপকরা। কড়া পুলিশি পাহারায় সেদিন ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন এই অর্ণব।