Burdwan: ভাগ্যিস হাতে ট্যাটুটা ছিল! ২২ বছর যা ঘটল… পর চমকে গেলেন বাবা-মা
Burdwan: খবর পেয়েই চিরিতন মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছন কাটোয়া-২ ব্লকের বিডিও আসীফ আনসারী ও স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা। পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে বলে জানান বিডিও।

কাটোয়া: ২২ বছর আগে সাইকেল চড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন যুবক চিরিতন মণ্ডল। তারপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বহু খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। থানা-পুলিশের কাছে ছুটেছে পরিবার। ছাপানো হয়েছে পোস্টার, প্রচারও চালানো হয়েছে। এত কিছু করার পরও ছেলেকে আর খুঁজে পায়নি বাবা। ছেলে ফিরে আসার আশা অনেকদিন আগেই ছেড়ে দিয়েছিল পরিবার। তবে গত বুধবার সব ধারণা পাল্টে যায়।
রাজস্থানের জয়পুরে সোনা-রূপার কাজ করতেন চিরিতন। ২০০৪ সালে অগ্রদ্বীপে ফিরেছিলেন তিনি। একদিন সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান বাড়ি থেকে, আর ফেরেননি। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৯ বছর। ছেলের খোঁজে গ্রামে গ্রামে পোস্টার লাগান বাবা, থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। কোনও লাভ হয়নি।
দিন কয়েক আগে কলকাতার এক মানসিক চিকিৎসার হাসপাতাল থেকে ফোন যায় পরিবারের কাছে। জানানো হয়, এক যুবক ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। হতে পারে, তিনিই সেই হারিয়ে যাওয়া সন্তান। ফোন পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন বাবা-মা। এতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। আদৌ ছেলে কি না দেখে চিনতে পারেননি মা-বাবা।
দ্বিতীয়বার, প্রতিবেশী কাকাকে সঙ্গে নিয়ে যান বাবা-মা। কাকাকে দেখেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন চিরিতন। তখনই ওই কাকা তাঁর হাতের ‘লাভ’ ট্যাটুটা দেখতে পান। সেটা দেখেই চিনে ফেলেন তিনি। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে পরিবারের সদস্যরা চিড়িতনকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
বাড়ি ফিরতেই আত্মীয়স্বজন ভিড় করেন চিরিতনকে দেখতে। স্থানীয় মানুষজনও ছুটে যান। খবর পেয়েই চিরিতন মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছন কাটোয়া-২ ব্লকের বিডিও আসীফ আনসারী ও স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা। পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে বলে জানান বিডিও।
জানা গিয়েছে, চিরিতন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে কলকাতার রাস্তায় ভবঘুরে অবস্থায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কলকাতা পুলিশ তাঁকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করায়। সুস্থ হতেই চিরিতনের কাছে নাম-ঠিকানা জেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার ছবি পাঠানো হয়। সেই সূত্র ধরে পরিবার খুঁজে পায় হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে।
তবে এখনও পুরো সুস্থ হয়নি চিরিতন। বাড়ির মাটির বারান্দায় আনমনে বসে থাকছেন। পুরনো দিনের স্মৃতি মনে পড়ছে, কিন্তু বিশেষ কিছু মনে করতে পারছে না চিরিতন। তবে মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে চোখে জল চিরিতনের।
