রায়না: পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমার সময় থেকেই অশান্তির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। মনোনয়ন পর্ব মিটলেও অশান্তি বন্ধের নাম নেই। বিভিন্ন জেলাতে প্রার্থী পদ প্রত্যাহারের জন্য বিরোধীদের চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। কখনও হুমকি, কখনও বিরোধীদের মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস। এ বার মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য ফোন করে সিপিএম প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ভোটের বাজারে এ রকম একটি অডিয়ো রেকর্ড ভাইরাল হয়ে হইচই ফেলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সেই অডিয়ো ক্লিপে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য সিপিএম প্রার্থীকে বলা হচ্ছে তা শোনা গিয়েছে। যদিও এই অভিযোগ স্বীকার করেছেন হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। ওই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি টিভি৯ বাংলা।
পূর্ব বর্ধমানের রায়ান ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৮ নম্বর বুথে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন প্রদীপ হাজরা। ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, রায়ান ১ নম্বর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি শেখ জামাল তাঁকে ফোনে প্রস্তাব দিচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। অডিয়ো ক্লিপে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আপনি কি নমিনেশন জমা দিয়েছেন? ওটা তুলে নিন। আমরা গাড়ি করে নিয়ে যাব, নিয়ে আসবো। কোনও অসুবিধা হবে না।” এর উত্তরে সিপিএম প্রার্থী বলতে শোনা যাচ্ছে, “মান সম্মান চলে যাবে এ সব করলে। আমার জ্যাঠামশাই এমএলএ ছিলেন। বাবা পার্টির নেতা। পারিবারিক সূত্র থেকে বাম রাজনীতিতে এসেছি। জেলা নেতৃত্ব আমাকে বেছে নিয়েছেন। এ কাজ করতে পারব না।” সিপিএম প্রার্থীর এ কথা শুনে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, “ওদের এখনো একটাও আসন নেই। আমরা ১৮টায় ওয়াকওভার পেয়েছি। আপনি জিতলে কি পঞ্চায়েত দখল হয়ে যাবে?” তার উত্তরে সিপিএম প্রার্থীকে বলতে শোনা যায়, “সে না হোক। আমি হাজরা ফ্যামিলির ছেলে। আমায় বাড়ি ফিরতে হবে। এ রকম কাজ করলে এলাকায় মুখ দেখাতে পারব না।”
মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফোনের বিষয়ে প্রদীপ হাজরা বলেছেন, “মনোনয়ন তোলার জন্য আমাকে ফোন করেছে। আমার পাশের বুথের প্রার্থীর বাড়িতেও বারবার আসছে ওরা। আমার বাড়িতেও এসেছে। কিন্তু আমি মনোনয়ন তুলবো না। সে কথাই ওনাকে জানিয়ে দিয়েছি।” অন্যদিকে এই অভিযোগ সপাটে উড়িয়ে দিয়েছেন সেখ জামাল। তিনি বলেছেন, “আমি এমন কোনও ফোন করিনি। ওরা প্রমাণ করুক। আমরা এমনিতেই ওয়াকওভার পেয়ে গিয়েছি। উন্নয়ন যা হয়েছে আমরা এমনিতেই জিতব। লড়েই আমরা ওদের হারাতে চাই।”