বর্ধমান: ‘গতকালের যা হয়েছে আমি অনুতপ্ত…’ সুর নরম করে এই ভাবেই ক্ষমা চাইলেন তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক। সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল। ঝান্ডা-লাঠি-সোঁটা হাতে সিপিএম-তৃণমূলের খন্ড যুদ্ধে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। সোমবারের এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এ দিন ক্ষমা চাইলেন বিধায়ক। একই সঙ্গে পুলিশকেও দুষলেন তিনি।
মঙ্গলবার বর্ধমান ২ নম্বর বিডিও অফিসে বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিধায়ক নিশীথ মালিক উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “গতকাল যা হয়েছে। তা উচিত হয়নি। পুলিশ সক্রিয় হলে হয়ত এই ঝামেলা বা অশান্তি আটকানো যেত।” পাশাপাশি তিনি জানান, “গতকাল সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ আমাদের দলের ৯ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আমাদের দলের কর্মীদের ২৫ টি বাইক ভাঙচুর চালানো হয় সিপিএমের পক্ষ থেকে। আমি গতকাল নিজে উপস্থিত থাকলে অশান্তি হতে দিতাম না।” বিধায়ক আরও বলেন, “আজ খুব শান্তিপূর্ণ ভাবেই সব দলই তাদের মনোনয়ন দাখিল করছে। কোনও ঝামেলা বা অশান্তি নেই। আমি নিজে বিরোধী প্রার্থীদের কাছে গিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করছি। সককেই বলেছে সব কিছু ঠিক ভাবেই চলছে।”
পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সিপিএম নেতা সাগর মল্লিক বলেন, “গতকাল আমাদের আটকানো হয়,মারধর করা হয়। তাতে আমাদের মনোবল কমেনি। বরং বেড়েছে।”
এ দিন আবার বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক ও সিপিএম নেতা সাগর মল্লিককে বিডিও অফিসে দেখা গেল সৌজন্যে বিনিময় করতে। বিধায়ক সিপিএম নেতা সাগর মল্লিকের কাছে এসে বলেন,” গতকাল যা হয়েছে তাতে আমি অনুতপ্ত,ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” বিধায়কের ব্যবহারে সিপিএম নেতাও খুশি বলে জানান।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন দাখিলের কাজ চলছে। সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বড়শুল মোড়ে সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে চরম বিবাদ বাধে। দু’পক্ষই দু’পক্ষের দিকে ইট পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ বাধা দিতে গেলে শক্তিগড় থানার ওসি দীপক সরকার সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। শেষ পর্যন্ত সিপিএম প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল না করেই ফিরে যান।
এদিন অবশ্য সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করছেন বিনা বাধায়। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে একবারে বড়শুল মোড় থেকে বিডিও অফিস পর্যন্ত। বিডিও অফিসের ঢোকার মুখে পুলিশের পক্ষ থেকে চেকিং করে তবেই ঢোকানো হচ্ছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় এক সঙ্গে দল বেধে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া হচ্ছে না প্রার্থীদের।