রায়না: রাজ্যে আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকা যাচাই করা শুরু হতেই একের পর এক দৃশ্য। কোথাও শাসক দলের নেতা পেল্লাই বাড়ি থাকার পরেও পরিবারের লোকেদের নাম আবাসের তালিকায়। আবার কোথাও ভাঙা চোরা ঘর হয়েও তালিকায় নাম নেই দরিদ্র গ্রামবাসীদের। এমন অভিযোগ বিভিন্ন জেলার থেকে যখন উঠে আসছে, তখন এক ভিন্ন চিত্র দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়। নিজের ভাঙাচোরা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনা থেকে নিজের নাম বাদ দিলেন পেশায় দিনমজুর পঞ্চায়েত প্রধান। এ যেন সত্যিই এক উলটপূরাণ, এমনই বলছেন আশপাশের লোকেরা।
পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ ব্লকের অন্তর্গত নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানে পঞ্চায়েতের প্রধান চাঁদু সিং। পেশায় দিনমজুর। থাকেন একেবারে ভাঙাচোরা একটি বাড়িতে। আবাসের সুবিধা প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁরও। কিন্তু ভাঙাচোরা একটি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও প্রধান নিজে থেকেই সেই নাম কাটিয়ে দিলেন। বলছেন, বিডিও অফিসে যে চূড়ান্ত তালিকা তিনি দেখেছেন, তাঁর থেকেও খারাপ অবস্থায় রয়েছেন এমন অনেকেই বাড়ি পাচ্ছেন না। সেই দেখেই ওই যোগ্য ব্যক্তিরা যাতে সুযোগ পান সেই নৈতিকতার খাতিরেই নাম কাটিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান।
পঞ্চায়েত প্রধান চাঁদু সিং জানাচ্ছেন, আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর নামও এসেছিল। নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ২৯০০ জনের নাম এসেছিল আবাস যোজনার তালিকায়। এরপর সেখান থেকে কমে তা হয় ১৮০০ জনের নাম আসে। পরবর্তী সময়ে আশা কর্মীরা সার্ভে করার পর ১৪২৫ জনকে ঘর পাওয়ার যোগ্য বলে গণ্য করা হয়। সেই সময় দেখা যায়, গ্রামে এখনও পর্যন্ত প্রচুর মানুষ রয়েছেন, যাঁদের অবস্থা তাঁর থেকেও খারাপ। । চাঁদু সিং মনে করেন, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর নাম থাকবে, অথচ অন্যান্য পরিবারগুলি, যাঁদের অবস্থা আরও খারাপ, তাঁদের নাম থাকবে না, এটা মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। প্রশ্ন করার সোজা জবাব, “আমি একজন জনপ্রতিনিধি। যোগ্য মানুষেরা ঘর পাবে না, অথচ আমার নাম থাকবে, তা হয় না। তাই নাম কাটিয়ে দিয়েছি।”