কেতুগ্রাম: খাসজমিতে বসবাসকারী এক অসহায় দুঃস্থ পরিবারের বাড়ি করার জন্য পঞ্চায়েতের ব্যবস্থাপনায় টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পঞ্চায়েতের তরফেই সেই টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির নোটিশ হাতে পেয়েই দুশ্চিন্তায় অভাবী পরিবার। টাকা ফেরত না দেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সেই সঙ্গে জেলও হতে পারে ওই পরিবারের। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে এমনটাও জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
কেতুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের পাচুন্দি গ্রামে রাস্তার ধারে খাসজমিতে তিন মেয়ে-স্ত্রীকে নিয়ে বাস করেন দিনমজুর রঘুনাথ মাজি। ২০২০-২১ সালে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব খাস জমির উপর মাটির বাড়ি দেখিয়ে ও পরিচয়পত্র নিয়ে ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম তুলিয়ে দেন। ব্যাঙ্ক মারফত প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়েও যান। কিন্তু নানা বাধ্য বাধকতায় খাস জমিতে পাকা বাড়ি না বানাতে পেরে ওই টাকা অভাবী সংসারে ধার দেনা মিটিয়ে দেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পড়ে দেড় বছর পর এই টাকা ফেরৎ চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত। এখন হঠাৎই পঞ্চায়েত সমিতির তরফে একটি নোটিস আসে। তাতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা ফেরত দিতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে খাস জমিতে বসবাসকারী এই পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির টাকা দেওয়া হল? কেনইবা আবার দেড় বছর পর সেই টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে একটি তদন্ত চলছে। আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা যথা জায়গায় প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে উপভোক্তাদের তালিকা রাজ্য প্রশাসনের কাছে চেয়ে পাঠায় কেন্দ্র। সেই তালিকা হাতে পাওয়ার পর আবার কেন্দ্রের তরফে তথ্য় তালাসে আসে এক প্রতিনিধি দল। তখনই চাপ বাড়তে থাকে পঞ্চায়েতের ওপর।
পঞ্চায়েত অবশ্য বলছে অন্য কথা। তাদের দাবি, অন্য জমি দেখিয়ে এই প্রকল্পের টাকা অন্যায় ভাবে নিয়েছে ওই পরিবার। আবার ওই ব্যক্তির বক্তব্য, ” কোন জমিই নেই আমার,খাস জমিতে থাকি। স্থানীয় তৃণমূল দলের লোক নাম নিয়ে এই প্রকল্পে নাম তুলে টাকা পাইয়ে দিয়েছে।” কীভাবে তাঁরা টাকা ফেরত দেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার।
এই প্রকল্প বিষয়ক সহায়ক অনন্ত সাহা জানান, “খাস জমিতে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই পরিবার আবাস প্রকল্পে টাকা পেল জানি না।” এটাকে ইস্যু করেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা অনীল দত্ত বলেন, “কাটমানির জন্য তৃণমূল সবাইকে টাকা পাইয়ে দিয়েছে। এবার কেন্দ্র থেকে ইনকোয়ারি হচ্ছে, তাই টাকা ফেরত চাইছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ।”