পূর্ব মেদিনীপুর: পিকনিকে আলাদাই মজায় ছিলেন দুই যুবক। কান ঝালাপালা করে দেওয়ার মতো আওয়াজে মাইক বাজিয়ে নাচানাচি তো চলছিলই। অভিযোগ, মহিলাদের মাঝেমধ্যে উত্যক্তও করছিলেন তাঁরা। এরই প্রতিবাদ করেন দুই ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার। এরপরই তাঁদের মারধর করেন ওই দুই যুবক বলে অভিযোগ। বর্ধমানের জামালপুরের এই ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে জামালপুর থানার পুলিশ।
ধৃতদের নাম সুশান্ত মণ্ডল ওরফে পাপাই ও সঞ্জু মুর্মু। জামালপুর থানার জৌগ্রামের শীতলাতলায় তাঁদের বাড়ি বলে জানা গিয়েছে। রবিবার সকালে বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। এদিনই ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে সোমবার ধৃতদের ফের আদালতে তোলার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
জামালপুর থানার গোপালপুরে নতুন বছরের প্রথমদিনে বেশ কয়েকটি দল পিকনিক করতে আসে। সেখানে একটি দল তারস্বরে মাইক বাজাচ্ছিল। দলের কয়েকজন মহিলাদের উত্যক্ত করছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। সেখানে কর্তব্যরত ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা জোরে মাইক না বাজাতে অনুরোধ করেন ওই পিকনিক পার্টিকে। একই সঙ্গে মহিলাদের সঙ্গে যাতে কোনওরকম অভব্য ব্যবহার না করা হয় তার জন্য সতর্কও করেন।
অভিযোগ, এরই মধ্যে সুশান্ত মণ্ডল ও সঞ্জু মুর্মু গলা চড়িয়ে এগিয়ে আসেন ওই দুই ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের দিকে। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। অভিযোগ সেই সময়ই কয়েকজন ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর হামলা চালান। বাঁশ দিয়ে তাঁদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মারধরের ঘটনায় অতনু ঘোষ নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার গুরুতর জখম হন। ঘটনার বিষয়ে ভিলেজ পুলিশ মলয় কুমার ঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই বেআইনি জমায়েত, মারধর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টের ধারায় মামলা রুজু করে জামালপুল থানার পুলিশ। এরপরই সুশান্ত মণ্ডল ওরফে পাপাই ও সঞ্জু মুর্মুকে গ্রেফতার করা হয়।
এলাকাবাসীদের কথায়, স্থানীয় মুক্তকেশী মন্দিরের পাশের মাঠে অনেকেই শীত পড়লে পিকনিক করতে আসে। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি কখনও হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা নীরজ সরকার বলেন, “১ জানুয়ারি এখানে দু’ তিনটে দল পিকনিক করতে এসেছিল। তারমধ্যে মেমারি থেকে এসেছিল। আশেপাশেরও কয়েকটি দল ছিল। সকাল থেকেই দু’টো দলের মধ্যে বচসা চলছিল। ঠেলাঠেলিও বেশ কয়েকবার হয়। সিভিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। শনিবার সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পর একটা দল খুবই ঝামেলা করছিল। সিভিক পুলিশ, ভিলেজ পুলিশ ওদের চলে যেতে বলে। এরপরই ভিলেজ পুলিশকে মারধর করে খুব। বাঁশ দিয়ে মারে। খুবই আহত হয়েছে।”