পূর্ব বর্ধমান: টিকা-বিতর্কে তৃণমূলের আরও এক বিধায়ক। আলিপুরদুয়ারের পর এবার কাটোয়া। সৌরভ চক্রবর্তীকে ‘রোখা’ গেলেও রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে টিকা নেওয়া থেকে বিরত রাখা গেল না। শনিবার সাতসকালে এমএলএ মশাই সটান হাজির হন কাটোয়া টিকাকরণ কেন্দ্রে। হাত বাড়িয়ে টিকা নিয়েও নেন। এরপর TV9 বাংলার প্রশ্নের মুখে পড়ে রবীন্দ্রনাথবাবুর নিরুত্তাপ প্রতিক্রিয়া, “ফোনে এসএমএস এসেছিল। তাই গিয়ে টিকা নিলাম। আমি তো বিধায়ক। আমিও তো যোদ্ধা।”
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চলছে করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি। হিসাবমতো গোটা দেশের সঙ্গে এ হাসপাতালেও ১০০ জন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর এদিন টিকা নেওয়ার কথা ছিল। হঠাৎই সেখানে দেখা যায় কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। ততক্ষণে ভ্যাকসিনও নেওয়া সারা।
আরও পড়ুন: ‘আমি টিকা নিচ্ছি না’, চরম বিতর্কে পিছু হঠতে হল তৃণমূল বিধায়ককে
কিন্তু প্রথম দফায় যখন কেবলই স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ হচ্ছে, তখন একজন প্রবীণ জনপ্রতিনিধি হয়ে কীভাবে তিনি এমন কাণ্ড ঘটালেন! TV9 বাংলা-র প্রশ্ন শুনে একই রকম নিরুত্তাপ গলায় রবীন্দ্রনাথবাবুর উত্তর, “কী করে বুঝব আপনারা এ নিয়ে বিতর্ক করবেন। আর আমি নিলে অসুবিধার কী আছে? আমরাই তো ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার। কাটোয়া পুরসভা থেকে করোনার জন্য যা কিছু করার আমিই তো করেছি।”
তিনি যে ‘অত জবাবদিহি’ করতে পারবেন না, সে কথাও বলে দেন। তাঁর সোজাসাপ্টা সাফাই, “আমার কাছে এসএমএস এসেছিল, আমি গিয়েছি।” বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতা মানতেই নারাজ যে স্বাস্থ্যকর্মী আর বিধায়ক এক নন। বরং পাল্টা উনি বোঝালেন, “আমি যা করেছি ঠিক করেছি। আমিও তো সামনে থেকেই কোভিড-কালে লড়েছি। আমার কাছে এসএমএস এসেছে, আমি যদি না নিই অন্যরাও তো ভয়ে নেবে না। সেই জন্যই নিয়েছি।”
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কথাই সার, টিকাপ্রাপকের তালিকায় প্রথম নাম তৃণমূল বিধায়কের!
প্রসঙ্গত, এদিনই সকালে আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর নাম দেখা যায় ভ্যাকসিন প্রাপকদের তালিকায়। TV9 বাংলা-র হাতেই প্রথম আসে সে তালিকা। এরপর বিতর্কের জাঁতাকলে পড়ে সৌরভ নিজেই বলেন, “আমি টিকা নিচ্ছি না।” কিন্তু রবীন্দ্রনাথবাবু প্রবীণ পোড়খাওয়া নেতা। সময় নষ্ট না করে সকাল সকালই টিকা নিয়ে ফেলেছেন।
শুধু রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ই নন, একইভাবে নিয়ম ভেঙে টিকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল ও প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরার বিরুদ্ধেও।