পূর্ব বর্ধমান: খণ্ডঘোষের পর এবার ভাতাড়ে শিক্ষককে হেনস্থার অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের ভাতাড়ের কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন স্কুলের এক শিক্ষক। এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ স্কুলে জড়ো হয়ে ওই শিক্ষককে ঘেরাও করেন। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষককে ঘিরেও তুমুল বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা ।
বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর স্কুলের অফিস ঘরে প্রধানশিক্ষক এবং অভিযুক্ত সহশিক্ষককে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ। তারপর ভাতার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও পুলিশের কাছে এনিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিভাবকরাও জানিয়েছেন তারা স্কুলশিক্ষা দফতরে গণ অভিযোগ জমা দেবেন।
কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। শুক্রবার স্কুলের প্রথম পিরিয়ড শেষ হতেই স্থানীয় বেশ কয়েকজন অভিভাবক স্কুলে যান। তাঁরা প্রায় সকলেই কুবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুরুষ মহিলা মিলে বেশ কিছু অভিভাবক প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কাছে ঢোকেন। তাঁরা স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নালিশ জানান প্রধানশিক্ষকের কাছে। তখন প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে গ্রামবাসীদের তুমুল তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এরপর অভিভাবকরা ওই সহশিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বেশকয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। এনিয়ে প্রধানশিক্ষকের কাছে কয়েকজন ছাত্রী জানিয়েছিল। কিন্তু প্রধানশিক্ষক গুরুত্ব দেননি।
মূলত অভিযুক্ত শিক্ষক এবং প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধেই গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলের দোতলার ঘরে সরিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিভাবকদের মধ্যে একজন বলেন,” আমার নাতনি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ও বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা খুলে বলে। তারপর আমরা স্কুলে এলে জানতে পারি প্রায় ৩৬ জন ছাত্রীর সঙ্গে এই ধরনের অশালীন আচরণ করা হয়েছে।”
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে ইতিপূর্বে তাঁর এই ধরনের আচরণ কোনওদিন দেখা যায়নি। এদিন প্রধানশিক্ষক সহ দুই শিক্ষিককে তালাবন্ধ করে রাখার পর পুলিশ এসে তালা খোলানো করায়। প্রধান শিক্ষক স্বপ্নাংশু লোধ এই নিয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করেন। অভিযুক্ত শিক্ষকও কিছু বলতে চান নি।
স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, “বিষয়টি নিয়ে মেয়েরা আমাকে জানিয়েছিল। আমি ওদের হেড স্যরকে জানাতে বলি। মেয়েরা হেড স্যরের কাছে অভিযোগ করতে গেলে হেড স্যর উল্টে মেয়েদের চরিত্রহীন বলে তাড়িয়ে দেয়।”