Burdwan University: বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারের টাকা যাচ্ছে কোথায়? ৩ কোটির বিল পাশ ঘিরে বিতর্ক বর্ধমানে

Burdwan University: মাসখানেক আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদল হয়েছে। আর এরপরই দেখা যায়, কোনও এক জাদুবলে প্রায় ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার বিল পাশ হয়ে যায়। আর এই নিয়েই দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের একাংশ।

Burdwan University: বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারের টাকা যাচ্ছে কোথায়? ৩ কোটির বিল পাশ ঘিরে বিতর্ক বর্ধমানে
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 15, 2023 | 7:30 AM

বর্ধমান: ফের চর্চায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগার থেকে কয়েক কোটি টাকা লুঠের অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পরীক্ষার ফি’র ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা কোষাগার থেকে উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু কোথায় গেল এই টাকা? সেই নিয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়েই টিভি নাইন বাংলায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি বেসরকারি সংস্থার চুক্তি হয়েছিল। ওই বেসরকারি সংস্থার মূলত দায়িত্ব ছিল পড়ুয়াদের রেজাল্ট, মার্কশিট ও অ্যাডমিট কার্ডের মতো বেশ কিছু বিষয়। মোটা টাকার চুক্তি হয়েছিল ওই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই সংস্থা চুক্তিমাফিক কাজ করছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। সেই কারণে অনেকদিন ধরেই বিল আটকে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বিল পাশ করতে অস্বীকার করেছে।

এদিকে মাসখানেক আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদল হয়েছে। আর এরপরই দেখা যায়, কোনও এক জাদুবলে প্রায় ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার বিল পাশ হয়ে যায়। আর এই নিয়েই দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের একাংশ।

তাঁদের বক্তব্য, আচার্য তথা রাজ্যপাল বিল পেমেন্ট করার অনুমতি দিয়েছেন, এই কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়। ইসি সদস্যদের ইমেল করে বৈঠক ডাকেন রেজিস্ট্রার। সেই বৈঠকেই ওই বেসরকারি সংস্থার ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার বিল পাশ হওয়ার অনুমোদন মেলে বলে খবর। অথচ, বৈঠকের পরই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের একটি ইমেল প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বিলের অনুমোদন নিয়ে আচার্যের ছাড়পত্র সংক্রান্ত কোনও নথি হাতে নেই। তাহলে কীভাবে টাকা দেওয়া হল? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই।

অভিযোগের তির মূলত প্রাক্তন উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ও ফিনান্স অফিসারের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়নের তরফে বুদ্ধদেব চক্রবর্তী যেমন  সরাসরি বলেই দিচ্ছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা লুঠ হচ্ছে। এটা যদি বিশ্ববিদ্যালয় লোক রেখে করত, তাহলে অনেক কম টাকায় এই কাজ করতে পারত বিশ্ববিদ্যালয়।’

এই অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর টিভি নাইন বাংলার তরফে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারের সঙ্গে।  রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী কোনও কথাই বলতে নারাজ। আর ফিনান্স অফিসার সৌগত চক্রবর্তী কিছু না বলে উল্টে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিলেন।

যোগাযোগ করা হয়েছিল বর্ধমানের প্রাক্তন উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষের সঙ্গেও। তাঁর বক্তব্য, ‘উপাচার্য হিসেবে আমার দায়িত্ব রেজাল্ট বের করা। আর তা করতে গেলে যার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তাকে তো পেমেন্ট করতে হবে। আমি বেশি দামে কিনেছি, কিন্তু চুক্তিটা তো বৈধ। পেমেন্ট না করলে তো ছাত্ররা ভুগছে।’

আর বর্তমান উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখনও তিনি বিষয়টি জানেন না। তবে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আবার বল ঠেলে দিয়েছেন রাজ্যপাল তথা আচার্যের কোর্টেই। তাঁর বক্তব্য, উপাচার্যরা রাজ্যপাল নিযুক্ত। সেক্ষেত্রে কেন তাঁকে প্রশ্ন করা হচ্ছে না?

এদিকে দুর্নীতির শিখরে পৌঁছতে তদন্তের দাবি তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গোস্বামীর দাবি, যাতে অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতি কিংবা ক্যাগ দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হয়।