Bardhaman: ‘অন্তত ছাব্বিশ পর্যন্ত…’, তৃণমূল কর্মীদের ‘সমঝে’ চলার নিদান দলের নেতার
Bardhaman: শুক্রবার বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের উদ্যোগে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, বিগত দিনের ২১ জুলাইয়ের সভাকে ছাপিয়ে এবারে বর্ধমান শহর থেকে জমায়েত করতে হবে।

বর্ধমান: সরকারি জমি দখল থেকে শুরু করে বেআইনি নির্মাণ, বারেবারে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই নিয়েই বার্তা দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকারের। তিনি বলেন, “অনেকে হয়ত ধরে নিয়েছেন নেতা হয়ে গিয়েছি। তাই বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাটের অনুমতি দেওয়ার অধিকারী হয়ে গিয়েছি। তাঁদের বলছি লাগাম দিন,অন্তত ছাব্বিশের নির্বাচন পর্যন্ত লাগাম দিন। অনুরোধ করছি ২০২৬-এর নির্বাচন পর্যন্ত এই সমস্ত ‘উপকারি’ কর্ম থেকে বিরত থাকুন।” পরেশের এই মন্তব্যের পরই শুরু হইহই।
শুক্রবার বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের উদ্যোগে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, বিগত দিনের ২১ জুলাইয়ের সভাকে ছাপিয়ে এবারে বর্ধমান শহর থেকে জমায়েত করতে হবে। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্ধমান পৌসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন অবৈধ নির্মাণ করা চলবে না। সরকারি জায়গা দখল করা চলবে না। পুকুর ভরাট করা যাবে না। সমাজে এই ধরনের কাজ যারা করেন, তাঁরা নেতা বা কর্মী হোন তাদের বলি একটু লাগাম দিন। প্রতিদিন সকাল থেকে ফোনে এবং সাক্ষাতে এই ধরনের অভিযোগ শুনতে শুনতে যথেষ্ট বিব্রত-বিরক্ত। সবাই দলের সম্পদ। কিন্তু যারা এই ধরনের কাজ করেন তাঁদের বলছি, একটু লাগাম দিন।” এরপরই তাঁর পরামর্শ, “আগামী ২০২৬ নির্বাচন পর্যন্ত। যদি না দেন সামাজিক পরিমণ্ডলে একটা নিন্দামন্দ দলকে মূল্য দিতে হয়। হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। অনেকে হয়ত ধরেই নিয়েছেন, এটা তার অধিকারের মধ্যে পড়ে। নেতা হয়েছি বেআইনি নির্মাণ করিয়ে দেওয়ার, পুকুর ভরাট করিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার অধিকার পেয়ে গিয়েছি। একজনকে খুশি করতে গিয়ে সেই এলাকার ১০০০ জনকে বিরোধী করে তুলছেন। প্রত্যেকে আঙুল তুলছে। অনুরোধ করছি ২০২৬-এর নির্বাচন পর্যন্ত এইসমস্ত ‘উপকারি’ কর্ম থেকে বিরত থাকুন।”
এ দিকে, এই ঘটনার পর বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে ছাব্বিশের নির্বাচনের পর আবার শুরু করার কথা বলছেন অনৈতিক কাজ? নির্বাচনে জেতার জন্য়ই শুধুমাত্র কি বার্তা? এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শান্তরূপ দে বলেন, “এই কথায় প্রমাণিত হচ্ছে, তাহলে পুকুর ভরাট সহ বেআইনি নির্মাণ সবই হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় এসব চলছে। আর ছাব্বিশ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলেছে। তার মানে নির্বাচনের পর সেগুলি আইনী হয়ে যাবে।”
যদিও এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভাবে নয়, সামাজিক ভাবেও তৃণমূলকে এগিয়ে যেতে হবে। তাই বললাম।”

