মনোতোষ পোদ্দার, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
শক্তিগড়: অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার থেকে রক্ষা পেয়েছে ডাউন বর্ধমান-ব্যান্ডেল প্যাসেঞ্জার ট্রেন। বুধবার রাত ৯টা ২০ নাগাদ বর্ধমান-হাওড়া শাখার শক্তিগড় স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যায় ট্রেনটি। রাতেই রেল আধিকারিকরা সেখানে পৌঁছেছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে লাইনচ্যুত হওয়া রেল বগিটি সরানোর কাজ। এ দিকে, ট্রেনটির এখনও পর্যন্ত সরানো না হওয়ায় ব্যহত রেল চলাচাল। চরম দুর্ভোগের শিকার নিত্যযাত্রীরা।
রেল সূত্রে খবর, ডাউন লাইনের পাশাপাশি আপ লাইনেও রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। বাতিল হয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রেন। যদিও, ডাউন লাইনে বর্ধমানের মেমারি থেকে হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে। তবে আপ লাইনে ট্রেন চালাচলে সমস্যা হচ্ছে। বাতিল হয়েছে বেশ কিছু এক্সপ্রেস ট্রেন। পূর্ব রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন যেগুলি ভোর কিংবা সকালে হাওড়া স্টেশনে আসার কথা ছিল সেগুলি বিভিন্ন স্টেশনের দাঁড়িয়ে রয়েছে। ডাউন শক্তিকুঞ্জ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে রয়েছে আসানসোল স্টেশনে। মোকামা প্যাসেঞ্জার ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে গোলসি স্টেশনে। ডাউন কুম্ভ এক্সপ্রেস মধুপুর স্টেশনে। ডাউন মিথিলা এক্সপ্রেস চিত্তরঞ্জন স্টেশনে। ডাউন যোধপুর এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে পরশনাথ স্টেশনে ও শিপ্রা এক্সপ্রেস ধানবাদে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং মেন লাইনের ক্ষেত্রে লোকাল ট্রেনের হাওড়া থেকে মেমারি পর্যন্ত যাত্রা পথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্ড লাইনের ক্ষেত্রে হাওড়া থেকে মশাগ্রাম স্টেশন পর্যন্ত চলছে।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে আপাতত একটি আপলাইন ফাঁকা রয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লোকাল ট্রেনটি এমন ভাবে কাত হয়ে পড়ে রয়েছে যে বাকি চারটি লাইন এখনও ব্লক হয়ে রয়েছে। তাই একটি মাত্র আপ লাইন থেকেই আপাতত ডাউন ও আপের ট্রেন চলাচল করানো হবে। তবে তাও সময় সাপেক্ষ।
এই বিষয়ে সিপিআরও পূর্ব রেল কৌশিক মিত্র বলেন, “সমস্ত সিনিয়র অফিসাররা ওইখানে রয়েছেন। জেনারেল ম্যানেজার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তত্ত্বাবধান করছে। আমরা চাইছি যত দ্রুত সম্ভব পরিষবা সচল করতে। এখন সিঙ্গল লাইন দিয়ে যত মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে সেগুলি চালানো হবে। রাজধানী-বন্দে-ভারত, গণদেবতা চলছে সিঙ্গেল লাইন দিয়ে। মেমারি ও মশাগ্রাম থেকে হাওড়া লোকাল চলছে। ”
বর্ধমান-হাওড়া শাখায় প্রচুর সংখ্যাক মানুষ যাতায়াত করেন। যেহেতু ট্রেন চলাচল বর্ধমান থেকে মেমারি বা মশাগ্রামে করছে না সেই কারণে আরও অসুবিধা হচ্ছে। এ দিকে, ট্রেন না চলায় বাসেই নিত্যযাত্রীরা যাতায়াত করেছেন। যার জেরে প্রচুর সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাসগুলি চলাচল করেছে।
প্রসঙ্গত, রাত ৯টায় বর্ধমান স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যায় ট্রেনটি। এরপর শক্তিগড় স্টেশন থেকে ২৫০ মিটার দূরে আচমকাই ট্র্যাক ছেড়ে বেরিয়ে যায় ট্রেনটি। স্টেশনের কাছাকাছি থাকায় ট্রেনের গতি খুব বেশি ছিল না, সে কারণেই দুর্ঘটনা এড়িয়ে যায় ট্রেনটি। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। প্রায় প্রত্যেকেই ট্রেন থেকে নেমে যান। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল পাশের লাইন দিয়েও। সেই মালগাড়িটি ট্র্যাক বদলানোর সময়েই সমস্যার সূত্রপাত। সিগন্যালে সমস্যা থাকার কারণেই সম্ভবত মালগাড়িটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে লোকাল ট্রেনটির। এরপর লাইন থেকে বেরিয়ে যায় লোকাল ট্রেনটি। লাইনচ্যুত হয় মালগাড়িটিও।