পূর্ব বর্ধমান: এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের দায়ে এক যুবককে মৃত্যদণ্ড দিল কাটোয়া আদালত। কেতুগ্রামের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল বছর পাঁচেক আগে। সেই মামলার রায়দান হল শুক্রবার। যদিও সাজাপ্রাপ্ত যুবকের বাবা জানান, এই রায় তাঁরা মানেন না। ছেলের জন্য সুপ্রিম কোর্ট অবধি যেতে রাজি তাঁরা। কাটোয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করার কথাও জানায় ওই যুবকের পরিবার।
আদালত সূত্রে খবর, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটেছিল। সেদিন সন্ধ্যায় বছর পাঁচের ওই নাবালিকাকে চানাচুর খাওয়াবেন বলে ডেকেছিলেন ওই যুবক। জানা গিয়েছে, সেই সময় অভিযুক্তের বয়স ছিল ১৭ বছর। পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন তিনি। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও ওই নাবালিকা বাড়ি ফেরেনি। এরইমধ্যে ওই যুবক জানান, ওই নাবালিকা বাড়ি ফিরে গিয়েছে। কিন্তু রাতভর মেয়ের খোঁজ পাননি বাবা, মা।
পরদিন বেলার দিকে বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি ডোবা থেকে নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কেতুগ্রাম থানার পুলিশ সেদিনই ওই যুবককে গ্রেফতার করেছিল। অন্যদিকে ময়নাতদন্তে শিশুটির গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। শরীরের নানা জায়গায় ক্ষতচিহ্ন। এরপরই ওই যুবকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ছোট্ট মেয়েটির গলার পুঁতির হার উদ্ধার করে পুলিশ।
২০১৮ সালের ১৫ মে কাটোয়ার পকসো আদালতে চার্জশিট জমা দেয় কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। চার্জশিটে ধর্ষণ করে খুনের উল্লেখ ছিল। ১৬ জন সাক্ষী দেন এই মামলায়। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন ২০২২) এই মামলায় ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে কাটোয়া আদালত। শুক্রবার হল রায়দান। দোষী সাব্যস্ত যুবকের বাবা বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। সবটা দিয়ে ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করব। দরকারে আমি সুপ্রিম কোর্টে যাব।”
অন্যদিকে বার এসোসিয়েশনের সম্পাদক সৌমেন সরকার বলেন, “কাটোয়া আদালতে এই প্রথম ফাঁসির সাজা হল। পকসো আদালতের সুকুমার সূত্রধর বিচারক। তাঁরই নির্দেশ। এই ধরনের সাজা হলে সমাজে হয়ত কিছুটা বদল আসবে বলে আশা করা যায়। শিশুদের প্রতি নির্যাতন, অন্যায়, বা যে কোনও অপরাধেই একটা ভয় কাজ করবে হয়ত।” এদিন রায়দানের সময় বিচারক সুকুমার সূত্রধর বলেন, এটা বিরলতম ঘটনা। সে কারণেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল।