গুসকরা : উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করেছিল। তারপর পাশ করানোর দাবিতে আন্দোলনেও সামিল হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও ফল মেলেনি। অবশেষে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ মোড় এলাকায়। মৃত ছাত্রীর নাম রাজিয়া খাতুন(১৮)। এই বছর গুসকরা গার্লস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকল পরীক্ষা দিয়েছিল সে। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজি এবং দর্শনে ফেল করেছিল কিশোরী। বুধবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রাজিয়াকে। পরিবারের লোকেরা তড়িঘড়ি রাজিয়াকে চিকিৎসার জন্য গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বর্ধমানের কলেজে গিয়ে পড়ার ইচ্ছা ছিল রাজিয়ার। কিন্তু রেজাল্ট বেরোনোর পর এক লহমায় স্বপ্নভঙ্গ। ফেল করার পর ব্যাপারটা একেবারেই মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না সে। ভেবেছিল, আন্দোলন করে যদি পাশ করিয়ে দেয়। সেই আশা নিয়ে বাকিদের সঙ্গে আন্দোলনেও নেমেছিল। কিন্তু গুসকরা গার্লস স্কুলের রাজিয়া উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল বলে দাবি পরিবারের। এদিকে আন্দোলনের পরও কোনও ফল না মেলায় রাজিয়া এই চরম সিদ্ধান্ত বেছে নিয়েছে বলে পরিবারের দাবি। পুলিশ পরে রাজিয়ার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠায়। রাজিয়ার এমন চরম সিদ্ধান্তে পরিবারের লোকেদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মেয়েহারা মায়ের বুক ফাটা কান্না।
রাজিয়ার বাবা মুজিবর সেখ জানিয়েছেন, “একটু মনমরা ছিল। রেজাল্ট তুলে আনার পর আমাকে দেখাল। দুটি সাবজেক্টে একটু কম নম্বর পেয়েছিল। আমি বললাম, কোনও অসুবিধা নেই। আবার ভাল করে পড়াশোনা করতে হবে। মাঝে শরীরও খারাপ হয়েছিল। আজ সকালেও কাজে যাওয়ার সময় দেখলাম বই বের করে পড়তে বসেছিল। এরপর আজ গলায় দড়ি দিয়ে মারা যায়।”