পূর্ব বর্ধমান: বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। একইসঙ্গে সামলাতেন পঞ্চায়েত প্রধানের পদও। মেমারির বিজুর-১ গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) প্রধান ঝরনা রায়ের প্রশংসা করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুরে ভরা সভা থেকে ঝরনার প্রশংসা শোনা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। সেই ঝরনা এবারের পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পেয়ে দল ছাড়লেন। বৃহস্পতিবার মেমারি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসের কাছে বিজুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান ঝরনা রায়-সহ শতাধিক তৃণমূল কর্মী সমর্থক যোগ দিলেন কংগ্রেসে। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের দাবি, তৃণমূল থেকে প্রায় ২ হাজার পরিবার কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, দলকে টাকা তুলে দিতে পারেননি। তাই দলের কাছে এই কর্মীরা সম্মান পাননি। অভিজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, এবার কংগ্রেসের হাত শক্তিশালী করবেন ঝরনারা।
একের পর এক তৃণমূল নেতার বিশাল অট্টালিকা যখন শিরোনামে, সেই সময় গত বছর দুর্গাপুরে এক সভা থেকে মমতা ঝরনার কথা তুলে ধরেছিলেন। বলেছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতার বড় বড় বাড়ির ছবি উঠে আসে, অথচ ঝরনার মতো যাঁরা দু’ বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার সামলে প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন, তা নিয়ে কেউ প্রচার করেন না।
ঝরনা রায়ের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরে এসে তাঁকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ দল তাঁকে যোগ্য সম্মানটুকু দেয়নি। ঝরনা রায় বলেন, “আজ আমার মনে হচ্ছে দল আমাকে চিনতেই পারল না। দলে আমি আমার সততার কোনও দামই পেলাম না। আমি কি টিকিট পাওয়ার যোগ্য ছিলাম না? দল আমার কথা ভাবল না পর্যন্ত। তাই আমি কংগ্রেসে যোগ দিলাম।”
যদিও এ বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “দলে দু’টো দিক থাকে। একটা প্রশাসনিক আর অন্যদিক হল সাংগঠনিক। ঝরনা রায়কে সাংগঠনিক কাজে লাগাবে ভেবেছিল। কিন্তু উনি তড়িঘড়ি দল ছেড়ে অন্য দলে চলে গেলেন। আমরাও তাঁর কাজের প্রশংসা করি। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর কাজের প্রশংসা করেছিলেন।”