পূর্ব বর্ধমান (কালনা): ভরসন্ধ্যায় রেলস্টেশনে আগুন লাগার ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক ছড়াল পূর্বস্থলীতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখার পূর্বস্থলী স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের পাশে এই আগুন লাগে। এখানকার যে প্যানেল রুম, আচমকাই তাতে আগুন লেগে যায় বলে খবর। সবে সকলে ছোটাছুটি শুরু করেন। এদিকে সন্ধ্যাবেলা হওয়ায় রেলস্টেশনে যাত্রীও প্রচুর। সকলের মধ্যে একটা ভয় আতঙ্ক থাবা বসায়। তাঁরাও ভয়ে এদিক ওদিকে ছোটেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। পূর্বস্থলী দমকল বিভাগের একটি ইঞ্জিন এসে প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দমকলের তৎপরতায় বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। তারা এতটাই দ্রুত এসে পৌঁছয়, আগুন বেশি ছড়ানোর আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী গৌতম নাথ বলেন, “আমরা বাজারেই থাকি। সন্ধ্যা তখন সাতটা সাড়ে সাতটা হবে। আগুন লেগেছে শুনতে পাই। আমরাও ছুটে আসি। এসে দেখি দাউ দাউ করে জ্বলছে। দমকলে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আসে। ২৫-৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরই দেখি স্টেশনের আলো বন্ধ হয়ে যায়। একেবারে অন্ধকার হয়ে যায় চারদিক। মেইন সুইচ তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়ায় হয়ত বিপদটা বড় হয়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখবেন রেলের লোকেরা। আলোচনা করছিল, রেলের ইঞ্জিনিয়াররা আসার পর মেইন সুইচ তুলে সব দেখা হবে। বিদ্যুৎ দফতরের লোকও এসেছেন। তাঁরাও সব ঘুরে দেখছেন। আমরা সকলে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছি। এমন জায়গায় আগুন লেগেছে। বিভিন্ন জায়গায় ছড়াতে সময় লাগবে না। স্টেশনের পাশে কত দোকান। সেগুলিতে লাগলে পুজোর মুখে তো সর্বনাশ হয়ে যেত।”
দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিটের জেরেই আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে রেলস্টেশনে থাকা আগুন নেভানোর সিলিন্ডার দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন রেলের কর্মীরা। কিন্তু কোনওভাবেই লেলিহান শিখা বাগে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। ততক্ষণে দমকলে খবর দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তারা এসেই সামাল দেয়। স্থানীয় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মনে হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। স্টেশন মাস্টারের ঘরের পাশেই ব্যাটারির ঘর ছিল, সেখানে লেগেছে। চারদিক একেবারে ধোঁয়ায় ভরে যায়। ভিতরে ঢোকা যাচ্ছিল না এমন অবস্থা হয়। দমকলের একটাই গাড়ি আসে। এসে আগুন নেভায়। ক্ষয়ক্ষতি কতটা কী হয়েছে, সেটা ওদের ইঞ্জিনিয়াররা এসে বলবেন।” এই ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখার জিআরপি ও আরপিএফ। আসে রেলের বিদ্যুৎ বিভাগের লোকও। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলেই রেল সূত্রে খবর।