পূর্ব বর্ধমান: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় রাজ্য। ইতিমধ্যেই ‘অযোগ্য’ অথচ চাকরি পেয়েছেন এমন বেশ কিছু নাম সামনে এসেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) তরফে ‘বেআইনি সুপারিশে’ প্যানেলে নাম রয়েছে এমন প্রার্থীদের নামও প্রকাশ করা হয়েছে। যা নিয়ে জোর চর্চা সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরইমধ্যে কালনার নাদনঘাটের এক স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষিকা দু’দিন ধরে স্কুলে আসছেন না। অভিযোগ, তাঁর নাম রয়েছে এসএসসি প্রকাশিত তালিকায়। কালনার রাজাপুর ভাতশালা ধীরেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠের ওই শিক্ষিকা ২০১৯ সালে কাজে যোগ দেন। মাঝে মাঝে সংস্কৃতেরও ক্লাস নিতেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকা তালিকায় সেই শিক্ষিকার নাম থাকাকে কেন্দ্র করে জোর আলোড়ন স্কুলের অন্দরে ও অভিভাবকমহলে।
স্কুল সূত্রে খবর, তালিকায় নামের অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। সহকর্মী সম্পর্কে এমনটা শুনে হতবাক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। বলছেন, এত ভাল পড়াতেন, তাঁর যে এভাবে চাকরি, বিশ্বাসই হয় না। ওই স্কুলেরই বাংলার শিক্ষিকা শুভ্রা দত্ত বলেন, “আমি আর কী বলব। উনি তো ভালভাবেই স্কুলে আসতেন, ক্লাস নিতেন। পিছনে যে এইসব ব্যাপার তা তো আমাদের জানা ছিল না। শুনে আমাদেরও খারাপ লাগছে। বুধবার থেকে আসছেন না। আমরা যোগাযোগ করিনি। কারণ উনি স্কুলে আসবেন কি আসবেন না সেটা প্রধান শিক্ষককে জানাবেন। আমাদের তো জানাতে বাধ্য নন। উনি সাদা খাতা জমা দিয়েছেন নাকি কীভাবে চাকরি পেয়েছেন তা তো আমরা জানতাম না। শুনে এখন অবাকই লাগছে। খারাপও লাগছে।”
আরেক শিক্ষক সঙ্গরাজ চন্দ্রের কথায়, “এটা তো আমরা ভাবতেই পারছি না। দু’দিন ধরে উনি স্কুলে আসছেন না। কিছু তো জানাননি বলেই শুনছি। আমরা হতবাক। এতদিন একসঙ্গে কাজ করলাম। উনি তো সব দায়িত্বও পালন করতেন। আমরা অবাক।” প্রধান শিক্ষক সজল নন্দীর বক্তব্য, “এখনও সরকারি কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসেনি। তবে ফেসবুকে দেখেছি। উনি দু’দিন আসেননি স্কুলে। ওনার স্বামী জানিয়েছিলেন, মন মেজাজ ভাল নেই তাই স্কুলে আসছেন না।” তবে কী নিয়ে মন মেজাজ খারাপ তা জানাননি বলেই দাবি প্রধান শিক্ষকের। এদিকে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলতে তাঁর বাড়ি অবধি গেলেও পরিবারের একজন জানান, তিনি বাড়িতে নেই। অসুস্থতার কারণে ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন। ওই শিক্ষিকা বা তাঁর বাড়ির কারও বক্তব্য পাওয়া গেল তা যুক্ত করা হবে এই প্রতিবেদনে।