পূর্ব মেদিনীপুর: বিজেপি কর্মী চন্দন মাইতিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় আগেই এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল (TMC) নেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ বার, আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করল ভগবানপুর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতরা সকলেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। ধৃতদের সোমবার কাঁথি আদালতে তোলা হয়। জানা গিয়েছে, ধৃৃতদের মোট ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কাঁথি আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা হলেন চিন্ময় গিরি, বাপন গিরি, পিন্টু গিরি ও অভিজিৎ মণ্ডল । সূত্রের খবর বাজকুল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। গত ৯ নভেম্বর চন্দন মাইতিকে খুনের ঘটনায় এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
ভাইফোঁটার দিন খুন হন চন্দন মাইতি। জানা গিয়েছে, তিনি বিজেপির শক্তিকেন্দ্রের যুব নেতা ছিলেন। ওইদিন সকালে দেড়িয়া দিঘি এলাকার নান্টু প্রধান কলেজের কাছে কেলেঘাই নদীর পাড় থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। বিষয়টি নজরে আসতেই এলাকাবাসী খবর দেয় পুলিশে। ভগবানপুর থানার পুলিশ পৌঁছে যায় ওই এলাকায়। দেহটি উদ্ধার করে প্রথমে ভগবানপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই বিজেপি কর্মীর।
বিজেপির অভিযোগ, চন্দনকে রাস্তা থেকেই তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তাঁরাই প্রথমে পেটানোর পর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে ওই বিজেপি কর্মীকে।
এই ঘটনায় এক বিজেপি কর্মী বলেন, “রাত দশটা নাগাদ রাস্তা থেকে চন্দনকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর নদীপারে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। তারপর চন্দনকে নান্টু কলেজের কাছে ফেলে রেখে দেওয়া হয়। আমাদের স্থানীয় কর্মীরা ভয়ে ওই এলাকায় যেতে পারেনি। এরপর ফোন আসে আমার কাছে। তখনই খবর পাই। ভগবানপুর থানার ওসিকে আমি ফোন করি। উনি জানান যে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে ওঁকে আর বাঁচানো যায়নি। এই নিয়ে দু’বার একই ঘটনা হল। এর আগেও একবার ওঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আসলে এলাকাবাসীর পাশে ছিল চন্দন। তাই একপ্রকার সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।” যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়েই তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভগবানপুর-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা। এর আগে ভোটপরবর্তী হিংসা তদন্তে এগরা ও নন্দীগ্রামে এসেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি খুনে নাম জড়িয়েছে খোদ তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের। যদিও, ভগবানপুরে বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। গোটা ঘটনাই ভগবানপুর পুলিশের তদন্তাধীন।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘ভয়ঙ্কর অন্যায় করেছিলাম’, ভুলের ‘মাশুল’ দিতে প্রস্তুত অনুব্রত!
আরও পড়ুন: Crime: বাজির আওয়াজে কেঁপে কেঁপে উঠছে শিশুরা, প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে হাঁসুয়ার কোপ তৃণমূল নেতার!