পূর্ব মেদিনীপুর: কালীপুজো উপলক্ষ্যে শনিবার ঘট উত্তোলনের রাতে ভাস্কর বেরাকে এক বিজেপি কর্মীকে (BJP worker) পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে একাধিক সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। অবশেষে, সমস্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই তিনজন হলেন, রামপদ জানা, সুশান্ত কামিলা, প্রবাল কুমার মাইতি। ওই তিনজন তৃণমূলের সমর্থক বলেই খবর। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।
কয়েকদিন আগেই জেলা থেকে বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের এক নেতাকে। এক মাস না যেতেই ফের খুনের ঘটনা সামনে আসে। আবারও এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ঘটনাস্থল বাসুদেব বেরিয়া অঞ্চলের ১১৪ নম্বর খাটিয়াল বুথ। মৃতের নাম ভাস্কর বেরা। শনিবার তাঁর বাড়িতে কালীপুজো ছিল। সেই কারণে তিনি ঘট উত্তোলন করতে বাড়ির বাইরে যান। অভিযোগ, সেখানে যাওয়ার পথেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে। লাঠির ঘায়ে গুরুতর জখম হন ওই ব্যক্তি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক (বিজেপি) অসীম মিশ্র জানান, “ভগবানপুরে তৃণমূল রক্তের রাজনীতি শুরু করেছে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের নৃশংস ভাবে খুন করেছে। কয়েকদিন আগেই বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের পর ফের গতকাল আর এক কর্মীকে শোভাযাত্রা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করল। এক মা তাঁর সন্তানকে হারালেন। এর শেষ কোথায়? ”
অন্যদিকে, কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতির মন্তব্য, “ভাস্কর বেরা একজন মদ্যপ। প্রচুর পরিমাণে মদ খেয়েছিলেন। এই কারণে ওঁর বিবাহ বিচ্ছেদও হয়েছে। গতকালও মদ খেয়েছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় খালের ধারে পড়েছিলেন। পরে, চিকিৎসকরা ভাস্করকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি উনি কোনও রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন না। বিজেপি যেখানেই মৃতদেহ দেখছে তৃণমূলের উপর দোষ চাপাচ্ছে।”
এদিকে, বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে, ভগবানপুরে বিক্ষোভ শুরু বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হন এক তৃণমূল নেতা। এরপর সেই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার এলাকায় পৌঁছান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার চণ্ডীপুর বিধানসভার ভগবানপুরে নিহত বিজেপি নেতা চন্দন মাইতি (শম্ভু)র স্মরণ সভা থেকে একযোগে পুলিশ ও রাজ্যকে নিশানা করেন সুকান্ত। বলেন, ‘একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরও এখন যদি পুলিশ ও গুণ্ডাদের সরিয়ে নেওয়া হয় ওরা পার্টি অফিস খোলার লোক পাবে না।’
আরও পড়ুন: Viral Audio Clip: ১ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে প্রার্থী টিকিট, ভাইরাল বিজেপি যুবনেতার কল রেকর্ড!