মেদিনীপুর: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ এতদিনে এক পেশে ছিল। এখন এই অস্ত্র ব্যবহার করেই বর্তমান শাসক বিঁধছে পূর্বসূরীকে। শাসকদলের একের পর এক নেতা সিপিএম আমলে হওয়া দুর্নীতি প্রসঙ্গে মুখ খুলছেন। আর দাবি করছেন, বাম আমলে হওয়া নিয়োগ দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে তাঁদের হাতে। এবার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতির। সুশান্ত ঘোষ, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীই নয়, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ধরে আক্রমণ করেছেন তিনি। কেবল পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬৮০ জনকে ইন্টারভিউ ছাড়া নিয়োগ করা হয়েছিল বলে বিস্ফোরক দাবি করেছেন অজিত।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের চাঁচাছোলা আক্রমণ করতে গিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী থেকে সূর্যকান্ত মিশ্র, সুশান্ত ঘোষদের একযোগে নিশানা করেছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর। অজিত মাইতির দাবি, সুশান্ত ঘোষের পরিবারের ২২ জন সদস্য ইন্টারভিউ ছাড়া বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন। তাঁর আরও বক্তব্য, “বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে ইন্টারভিউ ছাড়াই। মেদিনীপুর কলেজে ইন্টারভিউ ছাড়া ৮২ জনকে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। হিসাব করে পাওয়া গিয়েছে সারা জেলায় ৬৮০ জনকে বেআইনি নিয়োগ দিয়েছে সিপিএম।”
একই সঙ্গে বিজেপি বিধায়ক হিরণ এবং বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অজিত মাইতি। তাঁর দাবি রেলে ক্যাজুয়াল রিক্রুটমেন্টের রাশ কার হাতে থাকবে, এই নিয়েই রেল শহর খড়্গপুরে দ্বন্দ্ব রয়েছে দিলীপ হিরণের।
যদিও অজিত মাইতিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছেন দিলীপ ঘোষ। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, “দুটো নাম দিক অজিত মাইতি, যাঁদের নিয়োগ করেছে দিলীপ ঘোষ। যদি দিতে না পারে তাহলে যা বলব তাই করতে হবে।” অন্যদিকে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, “২০১১ সালের আগে দুর্নীতির সঙ্গে যে সিপিএম যুক্ত, তার এখনও পর্যন্ত একটাও প্রমাণ দিতে পারেনি শাসকদল।”
অজিত মাইতি আবার প্রশ্ন তুলেছেন, “শুধু তৃণমূলের আমলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এত হইচই। বাকি সময়ের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কেন এত প্রশ্ন উঠছে না?” সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক প্রতিক্রিয়ায় রীতিমতো সরগরম জেলার রাজনৈতিক মহল।