পূর্ব মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা। সম্প্রতি আদালতও জানিয়ে দিয়েছে, এ রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হতে কোনও সমস্যা নেই। ভোটের দিনক্ষণ যে কোনও মুহূর্তে ঘোষণা হতে পারে। তার আগে প্রতি মুহূর্তে যেন তপ্ত হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মাটি। আগামী সপ্তাহে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় তিন দিনের সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে রামনবমীর উদযাপনকে কেন্দ্র করে লাগছে রাজনীতিরও রং। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিকারীদের এক সময়ের খাস তালুক কাঁথি শহরে বৃহস্পতিবার টান টান উত্তেজনা এই রামনবমীকে কেন্দ্র করে।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস ও পুরসভার তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে বাসন্তী পুজো ও রামনবমী উৎসব আয়োজন করেছে। যার সভাপতি যথাক্রমে পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। মূল পুজোর আয়োজন করা হয়েছে কাঁথি পুরভবনের পাশে। রামনবমীর শোভাযাত্রা বের হয় এদিন। কাঁথির ডরমেটরি ময়দান থেকে কাঁথির কেলটেক্স মোড় হয়ে শ্রীরূপা রোড, ক্যানেলপাড়, রাজাবাজার, পোস্ট অফিস মোড়, চৌরঙ্গী মোড় হয়ে রূপশ্রী বাইপাস। তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী।
সৌমেন্দুর বক্তব্য, “পুরসভায় একটাই পুজো হতো, বিশ্বকর্মা পুজো। পুরসভার বহু গাড়ি, যন্ত্র আছে। এখন শ্রীরামচন্দ্রের আশ্রয়ে সকলে আসছেন। সেটা ভাল কথাই। তবে এটা করা হয়েছে মানুষের অন্যান্য দিক থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য। তাতে কর্মচারিদের বকেয়া মেটানো থেকে কিছুদিন দূরে থাকা যায়।”
যদিও কাউন্সিলর অতনু গিরি বলেন, “রামনবমীর অনুষ্ঠান কাঁথিতে তৃণমূল কংগ্রেসই প্রথম শুরু করে। কাঁথি শহর রামনবমী কমিটি নাম দিয়ে কাঁথির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তা হয়। প্রায় ৬ বছর আগে শুরু করেছিলাম। আজও একইভাবে হচ্ছে। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে না জড়িয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে একটা সম্প্রীতির বার্তা দিতে এটা করছি।”
অন্যদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে কাঁথিতে ৪০টি ট্যাবলো সহকারে কাঁথি ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু করে কাঁথি কলেজ হয়ে ক্যানেলপাড়, রাজাবাজার, পোস্ট অফিস, চৌরঙ্গি মোড় হয়ে রূপশ্রী বাইপাসে যায় একটি শোভাযাত্রা। যার নেতৃত্বে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতৃত্ব। এই মিছিলে ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী-সহ কাঁথি জেলার বিজেপি নেতৃত্ব।
এ নিয়ে আবার কটাক্ষ করেন কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল মান্না। তিনি বলেন, “কাঁথিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক’টা লোক আছে? বাইরে থেকে লোক আনা হচ্ছে, ট্রেনে করে লোক নিয়ে আসা হচ্ছে, মাঠে লোক খাওয়ানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। এটা কি রাজনীতি নয়? আমাদের রাম-সীতা হৃদয়ে থাক, রাজনীতিতে নয়।”