তমলুক: পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। শুরু হয়ে গিয়েছে, শক্তি প্রদর্শনের পালা। আজই রাজ্যের চার প্রধান রাজনৈতিক দলের বড় কর্মসূচি ছিল কলকাতায়। আর আজকের দিনেই ফের সমবায় নির্বাচনে ‘রাম-বাম’ জোটের তত্ত্ব। পঞ্চায়েতের আগে আরও একটি সমবায়ের ভোটে বাম-বিজেপি প্যানেলের জয়জয়াকার। এবার তমলুকের (Tamluk) হিজলবেড়্যা চাতরাদাঁড়ি কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে উড়ল লাল ও গেরুয়া আবির। এখানে মোট ১২টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ১১টি আসনেই জয়ী হয়েছেন বামপন্থী প্যানেল ও বিজেপি প্যানেলের প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা। বাকি একটি মাত্র আসনে জয়ের মুখ দেখেছে তৃণমূলপন্থী প্যানেল। অর্থাৎ, ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারেনি সবুজ বাহিনী।
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে হিজলবেড়্যা চাতরাদাঁড়ি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোট ছিল সকাল দশটা থেকে। মোট ১২টি আসনে ভোট হয়। সেখানে ১২টি আসনের মধ্যে ১২টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূলের প্যানেল। অন্যদিকে বাম ও বিজেপির প্যানেল মিলে প্রগতিশীল জোট তৈরি করে ১২ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। মোট ২৬ জন প্রার্থী নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন দুই জন নির্দল প্রার্থীও। এদিন বিকেলে ভোটের গণনাপর্ব শেষ হতে দেখা যায়, মাত্র ১টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূলের প্যানেলের প্রার্থী। উল্লেখ্য, সমবায় নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না।
এদিন বাম ও বিজেপি শিবির থেকে জয় লাভের পর উচ্ছাস দেখালেও শাসক দল তৃণমূলের এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, শাসক শিবির থেকে এর আগেও বার বার বুঝিয়ে দেওয়া, এই সমবায় নির্বাচনের কোনও প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে না। রাম-বাম জোট নিয়েও খোঁচা দিতে দেখা গিয়েছে বার বার। নীচু তলায় বিজেপির সঙ্গে জোট ভালভাবে দেখছে না সিপিএম নেতৃত্বও।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া কোনওভাবেই বরদাস্ত নয়। টিভি নাইন বাংলায় একান্ত সাক্ষাৎকারে কিছুদিন আগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছিলেন, ‘বিজেপি চরম দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল দল। এই কথাটা যারা বুঝবে না তাদের আমাদের সঙ্গে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। আমরা রাজনৈতিক আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে ঘোরাফেরা করতে পারব না।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘যারা এরকম কাজ করতে চায় তারা যেন আমাদের পার্টিতে না থেকে অন্য পার্টিতে চলে যায়।’ আর এখানেই কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। তাহলে কি বামেদের উচুতলার বক্তব্য, নীচুতলায় ঠিকঠাক পৌঁছাচ্ছে না?
এই বিষয়ে সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উঁচু তলার বক্তব্য নীচু তলায় পৌঁছাচ্ছে। সে জন্য রাজ্য নেতারা জেলায় জেলায় এসে বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করে বামপন্থী স্তরের মানুষদের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার মধ্যে দুই একজন অবুঝ থাকতে পারেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আমাদের ৯৫ শতাংশ মানুষ উঁচু তলার বার্তাকে মান্যতা দিয়ে কাজ করছে।’