পূর্ব মেদিনীপুর: দূর থেকে দেখে আপনার চোখ আটকে যেতেই পারে মন্দিরের আদলে তৈরি এই বাড়িটি দেখে। কেউ-কেউ আবার ভুল করে মন্দিরও ভেবেও বসতে পারেন। কিংবা কোনও ভ্রমণমূলক স্থানের রিসর্ট। আসলে কোনওটাই নয়। চোখ ধাঁধানো বাড়ির মালিক পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অমিয় কান্তি ভট্টাচার্যের। এলকায় এই প্রাসাদতুল্য বাড়িটি ‘কাবলু বাবুর বাড়ি’ হিসেবে পরিচিত।
সাম্প্রতিক, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে শাসকদলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধির ঝাঁ-চকচকে বাড়ির ছবি। কোনওটি শেয়ার করেছে বিরোধীদলের সদস্যরা। কোনও ছবি আবার শেয়ার করেছেন খোদ সাধারণ মানুষ। ছবিগুলির ক্যাপশনে কোথাও স্পষ্টভাবে, কোথাও বা পরোক্ষে লেখা হয়েছে, অসৎ উপায়ে না কি জনপ্রতিনিধিরা এমন সব প্রাসাদোপ্রম বাড়ি তৈরি করেছেন। যদিও অকাট্য প্রমাণ সেভাবে নেই। চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন লেখালিখি চলছে।
বাড়ির বিশেষত্ব কী?
মূলত, দক্ষিণ ভারতের মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে বাড়িটি। প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ বর্গফুট। দোতলা বাড়ি। অমিয়বাবুর দাবি অনুযায়ী, চারটি ঘর আছে দু’টি তলা মিলিয়ে। গোটা বাড়িটি সাদা। চারদিকে দেওয়াল তোলা রয়েছে। সূত্রের খবর, লক্ষাধিক টাকা দিয়ে তৈরি এই বাড়ি।
কে অমিয় কান্তি ভট্টাচার্য?
বর্তমানে চণ্ডীপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। ১৯৬৭ সালে প্রথম রাজনীতির ময়দানে হাতেখড়ি। ১৯৭৮ সালে সক্রিয় ভাবে রাজনীতির ময়দানে নামেন। প্রথম জীবনে কংগ্রেস করতেন। ১৯৯৮ সাল থেকে অর্থাৎ তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ঘাসফুলে রয়েছেন তিনি। ২০০১ সাল থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করছেন। পরপর দু’বার পরাজিত হয়েছেন। তবুও থেমে থাকেননি। এরপর আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ২০১৬ থেকে দু’বার জয়লাভ করে বিধায়ক হয়েছেন। তবে, ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাননি তিনি। তাঁর জায়গায় দাঁড়িয়েছেন সোহম চক্রবর্তী।
বাড়ি নিয়ে অমিয় কান্তির বক্তব্য়
তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের চরিত্র বিরোধিতা করা। আমাদের জমিদার বাড়ি। আগে থেকেই জমি জায়গা রয়েছে আমাদের। এছাড়া নিজের সঞ্চয় রয়েছে। আশি থেকে নব্বই বিঘার ফিশারি রয়েছে। আরও নানা ধরনের আয়ও রয়েছে। তাই এই বাড়ি নিয়ে প্রচার করার কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না।’ অমিয়বাবু আরও বলেন, “আমাদের এলাকা অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত। ঘুরে দেখলে দেখা যাবে আমার বাড়ি অনেক ছোট। এর থেকেও অন্যান্যদের আরও বড় বাড়ি রয়েছে।”
স্থানীয় বিজেপি নেতা পুলক গুড়িয়া বলেন, “শুনেছিলাম দু’তিন বছর আগে এবি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা শুরু করেছেন। তৃণমূলের উন্নয়নের ছোঁয়া শুধু বিধায়ক নয়, পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। তা ওনার প্রাসাদ দেখলেই বোঝা যায়।”