পূর্ব মেদিনীপুর: শুধু বাংলা নয়, দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) চালু করা আশু প্রয়োজন বলে মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। যদিও এটা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত মত বলে জানালেন রাজ্যের বিরোধী নেতা। বিজেপি বিধায়কের দাবি, ভারতজুড়ে নাগরিকপঞ্জী (NRC) তৈরিরও দরকার আছে। বাংলাও সেই পথের পথিক না হলে রাজ্যে বেকারত্ব বাড়বে। জনবিস্ফোরণ হবে।
শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে তাম্রলিপ্ত স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে তমলুক সাংগঠনিক জেলার বড়বাজার এলাকায় চলছে প্রাক স্বাধীনতা দিবস উদযাপন। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে প্রথমে সনাতনী হিন্দু ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “জাতিসঙ্ঘে এই প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করলেন। সেই ১৮৯৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোয় গিয়েছিলেন সনাতনী হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে। ভারতবর্ষকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে। আর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি নিয়ে গেলেন রাষ্ট্রসঙ্গে সভাপতিত্বের মধ্য দিয়ে।”
এরপরই সিএএ ইস্যুতে সুর চড়ান অধুনা বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাব, তাঁর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতায় ২০১৯ সালে সিএএ চালু করেছেন। সিএএ আইনে পরিণত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত হয়ে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “মতুয়া, নমশূদ্ররা যদি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য যান তাঁদের কাছে ‘৭১ সালের আগে দলিল চাওয়া হয়। তাঁদের সমান নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়া হয়নি। সেই নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।” শুভেন্দুর আরও সংযুক্তি, “আমার ব্যক্তিগত মত, সারা ভারতবর্ষে নাগরিকপঞ্জী চালু করা দরকার। পৃথিবীর সব দেশে আছে, আমাদেরও দরকার।”
তিনি দাবি করেন, অসম ও উত্তরপ্রদেশ সরকার আগামী ১০০ বছর দেশকে কীভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায়, সে ব্যবস্থা করেছে। উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বাংলাতেও সেটা না করলে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ও বেকারত্ব বাড়তেই থাকবে।
উল্লেখ্য, সিএএ ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দল প্রথম থেকেই বিরোধিতা করে এসেছে। রাজ্যে কোনওভাবেই সিএএ কিংবা এনআরসি, কোনওটাই চালু করতে দেবেন না বলে মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি অসমে যাদের নাম এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়েছে, তাদের নাম ফের তালিকায় ঢোকানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে বিধানসভা ভোটের আগে সিএএ, এনআরসি নিয়ে আওয়াজ তোলা বিজেপি এখন এ নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করছে না। কিছুদিন আগে অবশ্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, সিএএ রাজ্যে কার্যকরী করতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চান। ফের ১৪ আগস্ট সেই নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জী ইস্যু নিয়ে সুর চড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। আরও পড়ুন: ‘মুসলিম লীগ নেই, তাদের প্রতিনিধি হয়েছে তৃণমূল লীগ,’ কটাক্ষ রাহুলের