পূর্ব মেদিনীপুর: বিধানসভা নির্বাচনে জয় নন্দীগ্রামে জয়লাভ হয়েছে তাঁর। কিন্তু, ফুলবদলের পর থেকেই একের পর এক পদ-ছাড়া হতে হয়েছে অধিকারী পুত্রকে। সম্প্রতি, তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির পদ থেকেও অপসারিত হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর দলবদলের পর থেকেই শান্তিকুঞ্জের সঙ্গে ক্রমেই ‘শীতল’ হয়েছে সরকারের সম্পর্ক। এ বার, মহিষাদলে প্রজ্ঞানানন্দ স্মৃতিরক্ষা সমিতির সভাপতির পদ থেকেও চ্যুত শুভেন্দু। পরিবর্তে, নতুন সভাপতি হলেন মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার, কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান সহ-সভাপতি শম্ভুনাথ সাউ।
প্রজ্ঞানানন্দ স্মৃতিরক্ষা সমিতি সূত্রে খবর, গত ২০১৫ সাল থেকে এই কমিটির সভাপতি পদে ছিলেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। সুদীর্ঘ, ছয় বছর পর তাঁর সভাপতির পদের মেয়াদ শেষ হলে লিখিতভাবে সমিতির তরফ থেকে জানানো হয়। কিন্তু, অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে সভাপতি পদ থেকে নিজেকে বিরত রাখার কথা আগেই কমিটির সদস্যদের জানিয়েছিলেন অধিকারী পুত্র। ২০১৯ সাল থেকেই কমিটির নানা কাজে শুভেন্দুর অনুপস্থিতির পাশাপাশি, তাঁর ব্যস্ততার ক্রমবর্ধমানে পদ থেকে ইস্তফা দিতে যান অধুনা বিজেপি নেতা। কিন্তু, মেয়াদ শেষ না হওয়ায় বাধ্য হয়েই সভাপতি পদেই আসীন থাকেন শুভেন্দু। অবশেষে একুশে এসে মেয়াদ শেষ হওয়ায় সভাপতির পদে শুভেন্দুর পরিবর্তে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীকেই বেছে নেন কমিটির সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার, কমিটির ৪১ জন সদস্যের মধ্যে ২৬ জনের উপস্থিতিতে এবং সর্বসম্মতিক্রমে শুভেন্দুর জায়গায় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, “মহিষাদলের আবেগ প্রজ্ঞানানন্দ স্মৃতি ভবন । স্বামী প্রজ্ঞানন্দ, স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্ত, সুশীল ধারা , সহ একাধিক বীর বিপ্লবীদের স্মৃতিবিজড়িত প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষার দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে । আগে আমি এই সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলাম বর্তমানে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন । চেষ্টা করব মহিষাদলের যে সমস্ত পুরানো স্মৃতি বিজড়িত জায়গা রয়েছে সেগুলোকে রক্ষা করার । সবার সম্মতিক্রমে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই দায়িত্বের কিছুটা অংশ সম্পন্ন করতে পারলে সেটাই হবে আমার কাছে পরম প্রাপ্তি।”
এদিকে, তৃণমূল বিধায়ককে সভাপতি করার নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে সশ্লিষ্ট মহল। কারন শুধু এই সমিতি নয় তৃণমূল ত্যাগ করার পর জেলার একাধিক স্থায়ী সমিতি থেকে বাদ গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নাম। তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে সভাপতির পদ পেয়েছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাম্প্রলিপ্ত সমিতি সূত্রে খবর, ২০১২ সাল থেকে নিজ ক্ষমতাবলে এই সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন শুভেন্দু। তারপর সভাপতির চেয়ার ‘আঁকড়ে’ ছিলেন ২০২১ পর্যন্ত। গত ৬জুলাই শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) সভাপতি পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই সেচমন্ত্রীকে সভাপতি পদে নিযুক্ত করা হয়। শুভেন্দুকে ছাড়াই রদবদল হয়েছে কমিটির। এ বার আরও একটি স্থায়ী সমিতির পদ থেকে নাম বাদ যাওয়া ও পরিবর্তে তৃণমূল নেতৃত্বের নিযুক্তিকরণের মধ্যে রাজনীতির নয়া সমীকরণই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও, এই ঘটনায় অধিকারী পুত্রের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আরও পড়ুন: পদ্মস্তুতিতে ‘আপদহীন’ শান্তিকুঞ্জ, জ়েড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাচ্ছেন ‘শিশিরপুত্র’