পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামে আত্মবলিদান দিবসে শহীদ-শ্রদ্ধা জানাতে এসে সরাসরি তৃণমূলকে নিশানা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সকালে, নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া থেকে কার্যত দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অধিকারী পুত্র। কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না শেখ সুফিয়ান থেকে লক্ষ্মণ শেঠকেও।
দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায়, নাম না করে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানকে উদ্দেশ্য করে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক বলেন, “দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় ১১জন গুন্ডার নামের চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। আর কয়েকটা আছে তাও ফাঁকা হয়ে যাবে। জোঁকের মুখে কি করে দেশি নুন দিতে হয় তা আমি জানি! আমি ও বিষয়ে ওস্তাদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সোনাচূড়াই হারিয়েছে। কারণ লোক ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ”
এখানেই না থেমে বিরোধী দলনেতার আরও সংযোজন, “আজকাল তো লক্ষ্মণ শেঠ দেখি তৃণমূলের পক্ষেই কথা বলেন। কিছুদিন পর হয়ত অফিশিয়ালি ওই দলেই যোগ দেবেন। আজ যাঁরা শহিদ দিবস পালন করেন তাঁরা তো কেউ তৃণমূল নন, সব তোলামূল। গত বছর আমায় শহিদ দিবস পালনে বাধা দেওয়া হয়েছিল। মাঝরাতে এসে মালা দিয়েছিলাম। আমি আজ ওদের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে শহিদ দিবস পালন করলাম। আমার ধৈর্য্য রয়েছে। সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে।”
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের। সেই ঘটনায় গ্রেফতার শেখ সুফিয়ানের জামাইকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কিন্তু, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে হাজিরা দিতে বলা হলেও ‘শারীরিকভাবে অক্ষম’ থাকায় হাজিরা দেননি সুফিয়ান।
অন্যদিকে, একুশের নির্বাচনী আবহে সদ্য সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পরেই শহিদ দিবস পালন করতে গিয়ে নন্দীগ্রামে ‘তৃণমূলী বাধার’ সম্মুখীন হন অধিকারী পুত্র। তাই মধ্য় রাতে শহিদ দিবসে মালাদান করেন। পরেরদিনই তৃণমূল শহিদ বেদি গঙ্গাজল দিয়ে পরিষ্কার করে। সেই একই ছবি ধরা পড়ে নেতাইয়েও। কিন্তু, এ বছর, ছবিটা সম্পূর্ণ অন্য। নিয়ম মেনেই ভোরবেলা শহিদ দিবস পালন করেন শুভেন্দু।
উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ২ জানুয়ারি রাজ্যের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। বর্তমানের করোনা আবহে বিধি মেনে সেখানে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। রাজ্য যাতে তাঁর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে, সেই কথাও বলেছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় শুভেন্দু অধিকারীর নেতাই যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। পাশাপাশি, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে জানিয়েছেন, কোনও জায়গায় যাওয়ার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুভেন্দু অধিকারীর যাত্রাপথে এবং তিনি যেখানে যাবেন, সেখানে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাজ্যের দায়িত্ব।