কাঁথি: ভোট মিটেছে। কিন্তু অভিযোগের বহর কমছে না। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ সামনে আসছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে পদ্ম শিবির ভোটে জিতেছে বলেই নাকি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানীয় জল সরবরাহ, এমনই অভিযোগ উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদার চাদঁবেড়িয়া গ্রামে। সমস্যা রীতিমতো জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে গত ১১ জুলাই। অভিযোগ, কাঁথি পুরসভা লাগোয়া চাঁদবেড়িয়া নামে ওই গ্রামে নাকি তার ঠিক পরের দিন থেকে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের একটি ট্যাপ আছে এলাকায়। সেটাই আপাতত একমাত্র ভরসা বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পরিষেবা প্রকল্প এখন পর্যন্ত চালু হয়নি। পাইপলাইন পাতা হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে সেই মাধ্যমে জল পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকী বেশ কয়েক বছর ধরে রিকশায় করেও বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দিত জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ট্যাপ কল থেকে নির্দিষ্ট সময়ে জল পান না অনেকেই। ফলে বাসন, জামা কাপড় কিছুই পরিষ্কার করা যায় না। গ্রাম পঞ্চায়েতে সদ্য নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য তথা বিজেপি নেতা সুনীতি দেবনাথ বলেন, “তৃণমূল হেরে যাওয়ার পর থেকে জনস্বাস্থ্য দফতর বাড়ি বাড়ি পানীয় জল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ির সামনে দিয়ে যে খাল গিয়েছে সেই তার জলও দুর্গন্ধযুক্ত ও আবর্জনায় ভরা। তাই অনেকেই কাঁথি পুর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পানীয় জল কিনছে।” অভিযোগ, পানীয় জলের জন্য ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে চার হাজার টাকা চেয়েছে কাঁথি পুরসভা।
কাঁথি -৩ নম্বরের বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, “পানীয় জল পরিষেবা পাচ্ছেন না, এমন কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিতভাবে করেননি। আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।” উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটে কাঁথি-১ নম্বর ব্লকে আটটির মধ্যে ৬টি, কাঁথি-৩ নম্বর ব্লকে ৭টির মধ্যে ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। চাঁদবেড়িয়া ছাড়াও স্থানীয় দুরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েতও বিজেপির দখলে গিয়েছে।
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই কাজ করছে তৃণমূল। পানীয় জল না দিয়ে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে কয়েকশ মানুষকে।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল। তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদ সদস্য তরুণ জানা বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতির রং কখনই দেখে না তৃণমূল। এগুলো কালিমালিপ্ত করার প্রচেষ্টা।”