কাঁথি: কাঁথি মানেই বিতর্ক। কাঁথি মানেই বিজেপি-তৃণমূল দ্বন্দ্ব। কিন্তু, এবার কাঁথিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোরদার চাপানউতর। গত ২৯ তারিখেই কাঁথি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থকরা ১১নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তরুণ বেরার দুর্নীতি ও গুণ্ডামির প্রতিবাদ করে। অভিযোগ ২৮ তারিখ মারধর করা হয় নির্দল কাউন্সিলর সুময় দাসকে। সেই অভিযোগ নিয়ে কাঁথি পুরসভায় ডেপুটেশন দিতে এসে কাউন্সিলরের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হন এক মহিলা। তিনি আবার কাঁথি পুরসভার কর্মী। যাতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। প্রতিবাদ করেন কর্মসূচিতে আসা অন্যান্য মহিলারাও। ইতিমধ্যেই তিনি কাউন্সিলর আলেম আলি খাঁনের বিরুদ্ধে ডাকযোগে অভিযোগ জানালেন। শুধুমাত্র কাঁথি মহিলা থানায় নয়, রাজ্য মহিলা কমিশন, জেলা পুলিশ সুপারেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। গত ২৯ শে জুন কাউন্সিলর আলেম আলি খান কাঁথি পুরসভার মধ্যে কীভাবে তাঁকে নিগ্রহ করা হয়েছে, এমনকী দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাও বিস্তারিতভাবে অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন ওই মহিলা। যদিও এ ঘটনা নিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
বিক্ষুব্ধ মহিলাদের সঙ্গে কয়েকজন কাউন্সিলরেরও ধস্তাধস্তি শুরু হয়৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে কাঁথি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। মাঠে নামেন মহিলা পুলিশ কর্মীরাও। তবে মূল অভিযোগ ওঠে কাঁথি পুরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলেম আলি খানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে গত মাসের শেষে প্ল্যাকর্ড হাতে কাঁথি শহরে বড় মিছিল করেন শতাধিক মহিলা। প্ল্যাকার্ড লেখা অবিলম্বে ‘তোলাবাজ তরুণ বেরাকে গ্রেফতার করতে হবে!’ এরপর পুর প্রধানের কাছেও বিক্ষোভ দেখান শতাধিক মহিলা। সেখানেও ব্যাপক উত্তেজনা ছাড়ায়। অভিযোগ পুরপ্রধান সুবল মান্নার কাছে ডেপুটেশন দিতে গেলে মহিলাদের পথ আটকান কয়েকজন কাউন্সিলর।
শ্লীলতাহানি শিকার ১১ নং ওয়ার্ড়ে বাসিন্দা এক মহিলা। ঘটনা প্রসঙ্গে ওই মহিলা বলেন “মঙ্গলবার আমাদের নির্বাচিত কাউন্সিলরকে মারধর করা হয়েছে। তার প্রতিবাদ জানাতে পুরপ্রধানের কাছে আমরা ডেপুটেশান দিতে এসেছিলাম। তখনই ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমাকে শরীরে বাজেভাবে হাত দিয়েছে। আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। শুধু আমাকে নয় অনেক মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে। আমি অপমান বোধ করছি। থানায় অভিযোগ জানাব।”
যদিও দলের অন্দরে ওনার বিরুদ্ধে কিছু নেতা চক্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাঁথি পুরসভা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলেম আলি খাঁন। এদিকে সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকালে সরকারি প্রকল্পে নিয়ে পুরপ্রধান সুবল মান্নার কাছে জানতে আসেন ১১ নং ওয়ার্ড়ে নির্বাচিত নির্দল কাউন্সিলর সুময় দাস। তখনই সেখানে হাজির হয় পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী তরুণ কুমার বেরা। দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে সবর হন। দুজনই কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করান। তার পরবর্তী একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও পুলিশ দুই পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বলে জানান কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। তবে এর পিছনে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বই মূল কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ।