কাঁথি: ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে উঠেছিল ধর্ষণের অভিযোগ। এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের ঘটনা। মামলা এখনও বিচারাধীন আদালতে। এসবের মধ্যেই এবার ওই মামলার নির্যাতিতার বিরুদ্ধেই জারি হল গ্রেফতারি পরোয়ানা। শনিবার এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে কাঁথি মহকুমা আদালত। কাঁথি অতিরিক্ত দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্রাক কোর্ট (পকসো) বিচারক অজেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এই পরোয়ানা জারি করেছেন। জানা যাচ্ছে যে সময়ের অভিযোগ, তখন নির্যাতিতা নাবালিকা থাকলেও, এখন তিনি যুবতী।
কিন্তু কী এমন ঘটল যে নির্যাতিতা ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল? জানা যাচ্ছে, ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ওই মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগে যুবতীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। কী কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠল যুবতীর বিরুদ্ধে? আদালত সূত্রে খবর, যুবতী একাধিকবার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার দিন এড়িয়ে গিয়েছেন।
আইনজীবী সূত্রে জানা যাচ্ছে, নির্যাতিতা ওই যুবতীকে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একাধিক দিন সাক্ষ্য দেওয়া এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এমন অবস্থায় একটি মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও আদালতে জমা করেন তিনি। কিন্তু সেই মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেখে সংশয় হয় বিচারকের। ফলে আদালত ওই মেডিক্যাল সার্টিফিকেটকে মান্যতা দেয়নি।
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রনেতার আইনজীবীর দাবি, ‘কাঁথি আদালতে ৮ টি সাক্ষ্য দেওয়ার দিন গিয়েছে, নির্যাতিতা সাক্ষ্য দিতে আসেননি। ওই নির্যাতিতা কখনও বলছেন পরীক্ষা আছে, কখনও বলছেন অসুস্থ।’
এমন অবস্থায় এবার অভিযোগকারী নির্যাতিতার বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল কাঁথি মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। যদিও এটি জামিন যোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। তবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য বলেছে আদালত। কাঁথি মহিলা থানার আইসিকে এই মর্মে নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ওই অভিযোগ নিয়ে কাঁথি মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতার মা। অভিযুক্ত ছাত্র নেতা ও তাঁর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। মামলার জল হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। পরে কাঁথি আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ওই অভিযুক্ত ছাত্রনেতা। জেলেও যান। কিন্তু পরবর্তী হাইকোর্টের থেকে জামিনে মুক্তি পান। তবে আদালতের শর্ত রয়েছে ওই অভিযুক্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় থাকতে পারবেন না। সেই নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে জেলার বাইরে রয়েছেন ওই অভিযুক্ত ছাত্রনেতা।