‘অনধিকার’ প্রবেশ? ৩ দশকে প্রথম ‘শান্তি কুঞ্জের’ হাতছাড়া কাঁথি পুরসভা

সায়নী জোয়ারদার | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Dec 31, 2020 | 9:28 PM

১৯৯০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা কাঁথি পুরসভার দায়িত্ব সামলেছেন শিশির অধিকারী। এরপর যথাক্রমে শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী সে পদে বসেন। এতদিন পর অধিকারীদের সে পরম্পরায় ছেদ পড়ল। 

অনধিকার প্রবেশ? ৩ দশকে প্রথম শান্তি কুঞ্জের হাতছাড়া কাঁথি পুরসভা
বাঁদিকে সৌমেন্দু অধিকারী। ডানদিকে সিদ্ধার্থ মাইতি।

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: একদিকে যখন মামলার পথে হাঁটছেন প্রাক্তন পুর প্রশাসক। অন্যদিকে তখনই চেয়ারে বসলেন নতুনজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ এক অদ্ভূত মুহূর্তের সাক্ষী রইল কাঁথি পুরসভা (যদিও কাগজে কলমে নাম কন্টাই পুরসভা) ভবন। টানা ৩০ বছর পর কাঁথি পুরসভার (Contai Municipality) মাথায় এমন কাউকে বসানো হল যাঁর সঙ্গে অধিকারী পরিবারের কোনও সম্পর্কই নেই। নতুন পুর প্রশাসক হলেন প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা তৃণমূলের কাঁথি শহরের সভাপতি সিদ্ধার্থ মাইতি। প্রশাসকমণ্ডলীর বোর্ডে থাকছেন শেখ সাবুল, হাবিবুর রহমান, সুবল মান্না, পম্পারানি মাইতির নাম।

কাঁথি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। তবে গত কয়েকদিনে রাজ্য রাজনীতিতে বিস্তর বদল আসে। সেই বদলের রেশ পড়ে কাঁথির অধিকারী বাড়িতেও। গত মঙ্গলবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর জানায়, কাঁথির নতুন প্রশাসক হচ্ছেন সিদ্ধার্থ মাইতি। এ সিদ্ধান্ত হইচই ফেলে দেয় রাজ্যজুড়ে। নতুন প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে সবর হন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠিও দেন তিনি।

আরও পড়ুন: প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানেও থাকছেন না শিশির! তবে কি শুভেন্দুর কথাই সত্যি হবে?

এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার নতুন প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার কথা সিদ্ধার্থ মাইতির। নিয়ম অনুযায়ী নাকি, নতুনকে প্রাক্তনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। অথচ সকালে পূর্বতন প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারীর একটি চিঠি প্রকাশ্যে আনেন এক পুর আধিকারিক। যেখানে লেখা, আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারণে তিনি পুরসভায় আসবেন না। সিদ্ধার্থ মাইতির চেয়ারে বসা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা।

পরে পুর আধিকারিক ও মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপে এই জট কাটে। প্রশাসক পদের দায়িত্বভার বুঝে নেন সিদ্ধার্থ মাইতি। কিন্তু এদিন আবার বেআইনিভাবে পদ থেকে অপসারণের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন সৌমেন্দু। আগামী সপ্তাহেই তার শুনানি হবে। অর্থাৎ এত লড়াই করে সিদ্ধার্থ মাইতিকে কাঁথির প্রশাসক পদে বসানো হলেও তার ভবিষ্যৎ যে কী তা এখনও ধোঁয়াশায় ভরা।

তবে কাঁথির মানুষই বলছেন, ভবিষ্যৎ যাই হোক ২০২০-র শেষ দিনে এ এক অদ্ভূত মুহূর্তের সাক্ষী রইল কাঁথি পুরসভা। গত ৩০ বছরে এই প্রথমবার অধিকারীদের বাইরে কেউ কাঁথি পুরসভার শীর্ষপদের অধিকারী হলেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা কাঁথি পুরসভার দায়িত্ব সামলেছেন শিশির অধিকারী। এরপর যথাক্রমে শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী সে পদে বসেন। এতদিন পর অধিকারীদের সে পরম্পরায় ছেদ পড়ল।

Next Article