কাঁথি: শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের পর দীর্ঘ সময় তাঁকে এক বিশেষ নামে সম্বোধন করতেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারা। শুধু দল নয়, ব্যক্তি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে পিছপা হন না কোনও নেতাই। এরই মধ্যে শুক্রবার বিধানসভায় চমক দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যে শুভেন্দুর সঙ্গে ভোটের ফল নিয়ে পর্যন্ত মামলা লড়েছে তৃণমূল, সেই শুভেন্দুকে নিজের ঘরে ডেকে চা অফার করলেন তাঁক একসময়ের নেত্রী মমতা। স্মরণ করলেন শিশির অধিকারীর কথাও। কিন্তু তৃণমূলের সেই চেনা-আক্রমণের যন্ত্রণার কথা এখনই ভুলছে না অধিকারী পরিবার। শুক্রবার একথা স্পষ্ট জানালেন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।
এদিন যেভাবে শুভেন্দুকে ঘরে ডেকেছিলেন মমতা, অধিকারীদের সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তাকে সংসদীয় রাজনীতির স্বাভাবিক সৌজন্য বলেই মনে করছেন দিব্যেন্দু। খাতায়-কলমে তৃণমূলে থাকা দিব্যেন্দুর সঙ্গে ঘাসফুল শিবিরের দূরত্ব এখন অনেকটাই। এদিনের ঘটনা পরম্পরা সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে দিব্যেন্দু বলেন, ‘এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি। এতে আমার কিছু বলার ধৃষ্টতা নেই। সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী। আজ যে সৌজন্যের নজির দেখা গিয়েছে, তার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
শিশির দা-র কথা বলার পর তবে কি তৃণমূল নেতাদের কু-কথা ভুলে যাবে অধিকারী পরিবার? দিব্যেন্দু বলেন, ‘সে ব্যথা যন্ত্রণার কথা তো আমরা ভুলতে পারব না। আমার বাবার ৮৪ বছর বয়স। নেত্রী আজ দাদা বলে সম্বোধন করেছেন।’ মমতাকে ‘অভিজ্ঞ’ ও ‘সচেতন’ রাজনীতিক বলে উল্লেখ করে দিব্যেন্দু বলেন, ‘যাঁরা এসব করছেন, তাঁদের আগামিদিনে নিশ্চয় নেত্রী সাবধান করবেন।’
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই শুভেন্দুকে মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে কটাক্ষ করে তাঁর বাড়িতে আরোগ্য কামনার বার্তা পাঠাতে শুরু করে তৃণমূল। শান্তিকুঞ্জের সামনে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বয়স্ক বাবা বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল কর্মীদের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু। আর তারপর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই এই সৌজন্য দেখা গেল বিধানসভায়।