পূর্ব মেদিনীপুর: শর্তসাপেক্ষে মকরস্নান হবে দিঘা-শঙ্করপুর-তাজপুরেও। তবে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জানিয়ে দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
বাড়ছে ওমিক্রন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্কুল-কলেজ-পর্যটনকেন্দ্র সমস্ত কিছুই আপাতত বন্ধ রয়েছে। উৎসব আয়োজনেও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। এরই মধ্যে শুক্রবার পালিত হবে মকরসংক্রান্তি। সমুদ্রে ডুব দেওয়ার জন্য প্রচুর মানুষ ইতিমধ্যেই হাজির হয়েছেন দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণি, জলধা, জুনপুটের সৈকতে। কিন্তু এবার ভিড় এড়াতে কড়া প্রশাসন। কোলাঘাট,গেওখালি-সহ বিভিন্ন ঘাটে যাতে মানুষ ভিড় না জমায় সে বিষয়ে নজর রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলায় এলাকা ভিত্তিকভাবে করোনা নিয়ম বিধির পরিবর্তন করেছে জেলা প্রশাসন। করোনার কারণে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে দিঘা মোহনা, শঙ্করপুরের গঙ্গোৎসব আয়োজনের অনুমতি দিয়েও পরে তা বাতিল করে দিয়েছে প্রশাসন। বিধি মেনে পূজা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কেবল। স্বাভাবিকভাবে এবার সমুদ্রে মকরস্নান হবে কিনা, তা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপ্রশাসন।
“জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “মকরস্নান নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে সব কিছু মাথায় রেখে এবার বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। বেশি ভিড় করা যাবে না। যাদের মাস্ক পরা থাকবে তাঁদের প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। স্নান করার পর সবার হাত স্যানিটাইজড করতে হবে। এ ব্যাপারে মাইকিং থাকবে। সর্বোপরি আমরা মকরস্নানের জন্য কোনও ভাবেই নতুন করে উৎসাহ দিচ্ছি না। ভিড় করে সমুদ্রে আসতে বারণ করা হচ্ছে পুণ্যার্থীদের।”
এদিকে, সাগর এখন মিনি ভারত। সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জড়ো হচ্ছেন গঙ্গাসাগরে। তীর্থযাত্রীদের থিকথিকে ভিড় সাগর মেলায়। সাগর সঙ্গমে স্নান শুক্রবার ভোরেই। প্রশাসনের হিসেব পাঁচ থেকে সাত লক্ষ পুণ্যার্থী সাগরে যাবেন এ বছর। করোনা বিধি মানার জন্য লাগাতার মাইকিং চলছে গঙ্গাসাগরে। চলছে স্যানিটাইজেশন। কপিল মুনির আশ্রমে একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি পুণ্যার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যে সব সাধু সন্ন্যাসী মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করছেন, তাঁদের মাস্ক পরতে অনুরোধ করছেন পুলিশ কর্মীরা। কোভিড বিধি মানার জন্য কড়াকড়িও করা হচ্ছে।
এদিন গঙ্গাসাগর মেলা পরিদর্শন করেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখলেন তিনি। মেলার প্রস্তুতি, কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখেন তিনি। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন তিন দফায় পরীক্ষা করে সাগরে আনা হচ্ছে পু্ণ্যার্থীদের। প্রশাসন অনবরত নজর রাখছে স্নানের সময় এক জায়গায় অত্যধিক ভিড় যাতে না হয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার জন্য অনবরত প্রচার করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। মেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত টানা নজরদারি থাকবে প্রশাসনের।