কাঁথি: কাঁথির সভা থেকে দেওয়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশকে ‘ডোন্ট কেয়ার’ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের। পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) মারিশদায় অপসারিত দুই তৃণমূল নেতাকে পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023) প্রার্থী করা হয়েছে বলে খবর। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কাঁথির জনসভা থেকে মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে পদত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনজনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দফতরে পাঠিয়েও দেন। কিন্তু, এদের মধ্যে ঝুনুরানি মণ্ডল ও গৌতম মিশ্রকে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে টিকিট দিয়েছে জেলা তৃণমূল। যা নিয়ে জোর শোরগোল জেলার রাজনৈতিক মহলে। সুযোগ বুঝে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কলেজ মাঠে সভা করতে যাচ্ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘা নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় মারিশদায় আচমকা দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিষেককে কাছে পেয়ে নানা অভাব অভিযোগের কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দারা। আবাস যোজনায় বাড়ি না পেয়ে কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেউ আবার পাকা রাস্তা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন অভিষেকের সামনেই। কেউ আবার পানীয় জলের সঙ্কটের কথা জানান। এমনকী নানা সার্টিফিকেটের খোঁজে পঞ্চায়েতে গেলে প্রধানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। সবটাই শোনেন অভিষেক। এরপর সোজা চলে যান কাঁথির কলেজ মাঠের সভায়। সেখান থেকেই শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির পাশের কলেজ মাঠে সভা মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্র’কে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় জেলার রাজনৈতিক মহলে। এবার তাঁদেরকেই ফের প্রার্থী করেছে জেলা তৃণমূল।
যদিও কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তরুণ কুমার মাইতির সাফাই, খেয়াল না থাকার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। বলেন, “গৌতম মিশ্র কোন পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রতিনিধি ছিল না, শুধুমাত্র অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ওনার নাম অঞ্চল ও ব্লক থেকে উঠে এসেছিল। আমাদের এটা খেয়ালও ছিল না। নজরে আসার পরেই আমরা রাজ্যকে জানিয়েছি। রাজ্য যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সেটাই হবে।” অন্যদিকে গৌতম মিশ্র বলছেন, “কাঁথির সভা থেকে অভিষেক স্যর আমাকে পদ থেকে সরে যেতে বলেছিলেন। আমি সরেও গিয়েছিলাম। তারপর থেকে দলের কর্মী হিসাবে কাজও করছি।” অন্যদিকে ঝুনুরানি মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাফ জানান, “আমি এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাইছি না এখন।”
তবে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র রীতিমতো কটাক্ষের সুরে বলেন, “চোর কোনওদিন চোরেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। তৃণমূল মানেই চোরেদের সংগঠন। কাটমানি খোর চোরেরাই প্রার্থী হবে এটাই স্বাভাবিক।”