‘শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ’ হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ফ্ল্যাটে প্রোক্লেমেশন নোটিস পুলিশের

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Sep 05, 2021 | 12:01 AM

Haldia Municipality: সূত্রের খবর, পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে হলদিয়া এবং ভবানীপুর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩৮৪ এবং ৫০৬ ধারায় ক্রিমিনাল কার্যক্রমের মামলা দায়ের হয়েছে।

শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ফ্ল্যাটে প্রোক্লেমেশন নোটিস পুলিশের
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ’ হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে থানায় অভিযোগের পর তাঁকে পলাতক ঘোষণা করে হলদিয়া মহকুমা আদালতের নির্দেশে ফ্ল্যাট সিল করল হলদিয়া পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামলবাবুর আজাদ হিন্দ নগরের বিলাসবহুল ফ্ল্য়াটে ঝুলল তালা। দেওয়া হল প্রোক্লেমেশন নোটিসও।

সূত্রের খবর, পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে হলদিয়া এবং ভবানীপুর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩৮৪ এবং ৫০৬ ধারায় ক্রিমিনাল কার্যক্রমের মামলা দায়ের হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন চেয়ারম্যানের অফিস সিল করা হয়েছে।

এ বার তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে ‘প্রোক্লেমেশন’ নোটিস দেওয়া হয়েছিল। গত ৩১ অগস্ট হলদিয়া আদালতে এসিজেএম এই প্রোক্লেমেশনের নির্দেশ দেন। তাঁর স্বাক্ষরিত নোটিস শনিবার শ্য়ামলবাবুর বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে তাঁকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে।

উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান থাকাকালীন ‘নিজের লোকের’ সংস্থাকে টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। এই অভিযোগেই এফআইআর দায়ের করা হয় হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বিজেপি নেতা শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে।  পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিবের নির্দেশে, বরাবরই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন তৃণমূল পরিচালিত হলদিয়া পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার। এফআইআরে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান থাকাকালীন শ্যামল আদক, আত্মীয়দের বেশ কিছু সংস্থাকে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে দুর্নীতি ।করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নবান্নের নির্দেশে হলদিয়া মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম তদন্ত শুরু করেছে।

যদিও, পাল্টা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বর্তমান সরকার বেছে বেছে কেবল বিরোধীদের উপর আক্রমণ করছে। সরকারের বদলে রাজ্যে দলতন্ত্র চলছে বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের। অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আইন আইনের পথে চলবে। শ্য়ামল আদকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ পুলিশের কাজ করবে।

২০১৭-তে পুরভোটে জেতার পর হলদিয়ার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামল আদককে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান করে তৃণমূল। গত ১৫ জানুয়ারি, চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। একুশের নির্বাচনে দলবদলের মরসুমে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন শ্যামল। সম্প্রতি, বিষ্ণুপুর পুরসভাতেও ১০ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্য়ামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘কত্তাবাবু’-র। ২০০৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন শ্য়ামাপ্রসাদ। ২০১১ সালে বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী হলে শ্যামাপ্রসাদের ক্ষমতা আরও বাড়ে।  ২০১৬ সাল থেকে রাজ্যের বস্ত্র ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। মন্ত্রী থাকতেই চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নোটিস দিয়েছিল ইডি। তারপরেই ধীরে ধীরে ‘নিজ গড়ে’ ক্ষমতা হারাতে শুরু করেন শ্য়ামাপ্রসাদ। একুশের নির্বাচন আবহে শ্য়ামল আদকের মতো তিনিও  শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বিজেপি-র অন্দরেও দলের একাংশের বিরোধিতার মুখে পড়ে প্রায় এককোণে হয়ে পড়েন প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁর তৃণমূলে ফেরার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। কিছুদিন আগেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও পড়ুন: ‘সোনার চাঁদ’ শ্যামের ৪ কোটি টাকার বিস্কুট-বাঁট রামের লকারে, চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের!

Next Article