এগরা: মঙ্গলবার দুপুর। শুরু হল ধ্বংসের ছবি দিয়ে। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। বর্তমানে সেই এলাকায় যাওয়া কার্যত দায়। কোথায় পড়ে রয়েছে পা, কোথাও হাত। জায়গা জুড়ে শুধু কান্নার রোল আর আর্ত চিৎকার। বেআইনি ওই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজন। তবে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে। অপরদিকে প্রায় সাতজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বাড়ির ছাদ থেকে ছিটকে দেহগুলি পড়েছে পুকুরে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ-প্রশাসন। ওনারা সচেতন থাকলে এই ঘটনা ঘটত না। এখানে রীতিমত বোমের আড্ডাখানা তৈরি হয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে লেনদেন করে এই কারখানা চলছিল। পুলিশ সব জানত। দায়ী পুলিশই। ওরা রোজ আসে। লেনদেন করে। নয়ত এতবড় ধান্দা কীভাবে চলল।” শ্যামাপদ প্রধান নামে আরও এক বাসিন্দা বলেন, “এখানে মহিলারা বেশি কাজ করতেন। এরা পুলিশকে মাশোহারা দেয়। এই নিয়ে তিনবার হয়ে গেল।”
যদিও এ দিন পুলিশ সুপার বলেন, “বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর অভিযোগে এই ভানুকে এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে আদালতে তিনি জামিন পেয়ে যান। এরপর ফের লুকিয়ে এই বাজি কারখানা চালাতে শুরু করেন অভিযুক্ত।” এ প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,”যিনি মালিক তাঁকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। গত কয়েকদিন হল বেআইনিভাবে ফের শুরু করেছিলেন। এরকম কিছু বাজি কারখানা এসব দিকে আছে। স্থানীয় লোকজন কাজ করে। যদি সমস্যা হয়, তখন সেই দায় তাঁদেরই নিতে হয়। ২ মাস আগে বিজেপি পঞ্চায়েত তৈরি করে, তাদের খবর রাখা উচিত ছিল যে আবার নতুন করে এসব হচ্ছে। মালিক ওডিশার দিকে পালিয়ে গিয়েছে।”
যদিও, এই ঘটনায় এনআইএ (NIA)তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করেছেন। পাশাপাশি তিনি গৃহমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন। এ দিন সুকান্ত বলেন, “গোটা রাজ্যে বোমা বন্দুকের কারখানা করেছে। ভারতবর্ষের কোথাও এ ধরনের ঘটনা দেখবেন না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। এটা পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি।”