পূর্ব মেদিনীপুর: চাকরিতে যোগ দিতে এসে পুলিশের জালে ৪জন চাকরি প্রার্থী। তাদের মধ্যে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে এসে ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে গ্রুপ ডি পদে কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের হাতে ধরা পড়ে যান ৪ জন। তাদেরকে তমলুক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য কর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার চারজন গ্রুপ ডি পদে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র নিয়ে আসেন। যোগ দিতে আসা প্রার্থীদের মধ্যে তিন জন মহিলা এবং এক জন যুবক। সেই নিয়োগপত্র দেখে জেলা স্বাস্থ্য কর্তা বিভাস রায়ের সন্দেহ হয়। ওই চার জনকে একে একে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের কথাতেই অসঙ্গতি থাকে। তিনি কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, এই নিয়োগপত্র গুলি ভুয়ো। তারপর তিনি চাকরিতে যোগ দিতে আসা তিন জন মহিলা ও এক যুবককে তমলুক থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, নিয়োগপত্রে যে স্ট্যাম্প রয়েছে, তা ঠিক নয়। আমরা তখন স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা বলছেন প্রতারণার শিকার। আমরা পুলিশকে ডেকে ওঁদের তুলে দিই। তিন জনের বাড়ি মেচেদাতে, এক জনের বাড়ি নন্দীগ্রামে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজে যোগ দিতে আসা ওই চার জন এক ব্যাক্তির মারফত নিয়োগপত্র পেয়েছে। তাঁরা বুঝতে পারেননি যে এই নিয়োগপত্র ভুয়ো। তমলুক থানা পুলিশ তাঁদেরকে থানায় নিয়ে গিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত অভিযুক্তকে ধরার জন্য চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে।
শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে কোন ব্যক্তি তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি এইভাবে আর কত জনকে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়েছেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। আপাতত এই ভুয়ো চাকরিপ্রার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ওই ব্যক্তির নাগাল পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ সামনে আসছে। দেবাঞ্জন দেব থেকে যে অধ্যায় শুরু হয়েছিল, তাতে জড়িয়েছে একের পর এক নাম। চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ সামনে এসেছে চলতি মাসের ১২ তারিখেই। সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে সেনা আধিকারিকের ছেলেকেই প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। রাজু প্যাটেল নামে ধৃত যুবক দমদমের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে।
প্রতারিত ব্যক্তির অভিযোগ, ২০১৯ সালে বারাকপুরে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তাঁর ছেলে। সে সময়ই তাঁর সঙ্গে রাজু প্যাটেলের পরিচয় হয়। অভিযুক্ত রাজু প্যাটেল তাঁর কাছ থেকে ফোন নম্বর চান। চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। প্রতারণার অধ্যায়ে এটি একটি নবতম সংযোজন।