পূর্ব মেদিনীপুর: দশমীর রাত। গোটা গ্রাম ভেসেছে বিসর্জনের সুরে। চতুর্দিকে ডিজে, কোথাও গ্রামে বসেছে মজলিশ। তার মধ্যেই গ্রামের পূর্ব দিকের কোণটার বাড়িটায় হঠাৎ দরজায় উর্দিধারী। পরিবারের সকল সদস্যরা যখন মজলিশে ব্যস্ত, তখন বাড়ির মালিক ঘাপটি মেরে বসেছিলেন ঘরের ভিতরই। উর্দিধারীদের দেখতেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। সামনেই কালীপুজো। তার আগে পর্যন্ত সব ‘সম্পত্তি’ যে ঘরের ভিতর সযত্নে আগলে রাখতে হবে! তাই গোটা পুজো বাড়ি থেকেই বের হননি তিনি। কিন্তু খবর পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশের কাছে। বিজয়া দশমীর গভীর রাতে প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি এবং বাজি তৈরি করার মশলা উদ্ধার করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
দশমীর রাত বারোটা নাগাদ কোলাঘাট থানার আন্দুলিয়া কলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে শব্দ বাজি এবং বাজি তৈরি করার মশলা উদ্ধার করল পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি আদতে বাজি ব্যবসায়ী। তিনি কালীপুজোর আগে ‘মাল’ মজুত করেছিলেন ঘরে। তমলুকের এসডিপিও সাকিব আহমেদের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পূর্ণচন্দ্রের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ইতিমধ্যে ওই বাড়ি থেকে পূর্ণচন্দ্র আটক করে নিয়ে যায় কোলাঘাট থানার পুলিশ। অন্যদিকে শব্দবাজিগুলি বাজেয়াপ্ত করে নিরাপদ নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যায়। পুজোর মধ্যে এত বারুদ উদ্ধার হওয়ায় উদ্বেগে পুলিশ প্রশাসন।
কয়েক মাস আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বাজি কারখানায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল গোটা বাংলাই। একাধিক জনের মৃত্যু হয়েছিল। ছিন্ন ভিন্ন, ঝলসানো দেহ উদ্ধার হয়েছিল কয়েক ফুট দূরের পুকুর থেকেও। কোথাও বাড়ির ছাদে পড়ে ছিল কাটা হাত , কোথাও আবার জঙ্গলে শরীরের অর্ধাংশ। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা নাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলার রাজ্য রাজনীতিকে। তারই মধ্যেই পুজোর মরসুমে এত বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় আবারও চাঞ্চল্য ছড়াল।