মেছেদা : কেউ স্টেশনে এনেছেন পান, কেউ এনেছেন ফুল। কিন্তু স্টেশনে এসে তাঁরা শুনলেন ট্রেন বাতিল। একদিন নয় পরপর পাঁচদিনের জন্য বাতিল ট্রেন। এ কথা শুনেই জিনিসপত্র নিয়ে স্টেশনেই বসে পড়লেন শ্রমিক ও কৃষকরা। তাঁদের পণ্য পৌঁছনোর ব্যবস্থা না হলে, তা স্টেশনেই পচে যাবে। তাই শুক্রবার সন্ধেয় প্রতিবাদ জানাতে পূর্ব মেদিনীপুরের মেছেদায় অবরোধ করলেন তাঁরা। রেল পুলিশের বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ফুল ও পান ব্যাবসায়ীদের রেল রোকো অভিযানে এ দিন আটকে যায় বহু ট্রেন। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তৈরি হয় প্রবল উত্তেজনা। পান, ফুল, গাছের চারা নিয়ে ব্যবসায়ী ও চাষীরা গিয়েছিলেন স্টেশনে। রেল ঘেরাও করে চলে তুমুল বিক্ষোভ। জিনিপত্রের ঝুড়ি ট্রেন লাইনে ফেলে অবরোধ করেন তাঁরা, বচসা চলে রেল পুলিশের সঙ্গে।
শ্রমিক ও চাষীদের অভিযোগ, রেলের বুকিং করা ছিল। হঠাৎ করেই পণ্যবাহী ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। আদতে শনিবার থেকে ওই ট্রেন বন্ধ হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত এ দিন আচমকাই বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে দাবি অবরোধকারীদের। সাকরাইল থেকে মাদ্রাজ পর্যন্ত যাওয়ার কথাছিল ট্রেনটির। তাঁরা আজ লক্ষ লক্ষ টাকার পান ,ফুল ,চারা, মাছ রেল স্টেশনে নিয়ে এসেছিলেন। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন।
হঠাৎ করে এই বিশেষ পণ্যবাহী রেল বাতিল হয়ে যাওয়ায় এই সমস্ত মূল্যবান পণ্য পচে নষ্ট হয়ে যাবে বলে দাবি শ্রমিক চাষীদের।
শুধু তাই নয় বিভিন্ন স্টেশনে এই সমস্ত পণ্য ওঠানামার জন্য রেল নির্দিষ্ট একটা সময় দিয়ে দাঁড়াত, এখন রেল সে সব জায়গায় স্টপেজ দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ। আমেদাবাদের স্টপেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এক অবরোধকারী। ফলে তাঁদের ব্যবসাক ক্ষতি হচ্ছে বলেই দাবি করেন তিনি।
তাঁদের দাবি, বুকিং নেওয়ার পরও নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন না দিয়ে খামখেয়ালিপনা করছে রেল দফতর। যতক্ষণ না তাঁদের এই পণ্য পরিবহনের ট্রেন দেওয়া হচ্ছে, এই রেল অবরোধ বা আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানান ফুল ব্যবসায়ী, পান ব্যবসায়ী সহ শ্রমিক ও চাষিরা। অবরোধে সামিল হন এই সমস্ত পণ্য বহনকারী প্রায় ২০০ শ্রমিক। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয় মেছেদা রেল স্টেশনে। সামাল দিতে হিমশিম খায় রেল পুলিশ প্রশাসন। এই অবরোধে আটকে পড়ে পুরী জগন্নাথ এক্সপ্রেস। আটকে পড়ে বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেনও। রেল পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয় ও রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন : Mukul Roy: দল পরিবর্তনই করেননি বিধায়ক, বোঝালেন মুকুলের আইনজীবী, ১ ঘণ্টা ধরে চলল দলত্যাগ শুনানি