দিঘা : ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিতে উপকূলের জেলা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে নতুন রূপে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। দিঘায় বিশ্ববাংলা পার্ক থেকে শুরু করে ঘাট সবক্ষেত্রেই আলাদা চমক দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাদ যায়নি শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমনিও। পাশাপাশি মুম্বইয়ের ধাঁচে দিঘা থেকে কাঁথি জোড়ার পরিকল্পনাও অনেকটাই বাস্তবায়িত হয়েছে। আবার এবার রাজ্য তথা জেলার মুকুটে নবতম সংযোজন দিঘার জগন্নাথ ধাম। যা বাস্তবায়িত হলে পড়শি রাজ্য ওড়শার মতোই পর্যটকদের আলাদা টান তৈরি হবে বলে মনে করছে সরকার। দিঘাতেই মিলবে পুরীর স্বাদ। মঙ্গলবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সেই মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ হল। মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি জানাচ্ছেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারণের জন্য খুলে যাবে জগন্নাথ মন্দির।
সৈকত শহরে ২০ একর জায়গা জুড়ে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে। এবার শুরু হচ্ছে মূল মন্দির নির্মাণের কাজ। সেই উপলক্ষে মঙ্গলবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন পুজোপাঠের আয়োজন করা হয়। হিডকোর তরফে জানানো হয়েছে, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই শুরু হয়ে যাবে জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজ। দিঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথধাম তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দিষ্ট ১৮ মাস সময় ধার্য করা হয়েছে। সেই মতো কাজ চলছে তৎপরতার সঙ্গে।
নিউ দিঘা স্টেশন লাগোয়া ভগীব্রহ্মপুর মৌজার বিস্তীর্ণ উঁচু বালিয়াড়ির ওপর গড়ে উঠছে এই জগন্নাথধাম। নির্মিত হবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অনুকরণে। উচ্চতাও হবে পুরীর মন্দিরের সমান। গোটা এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নেও জোর দেওয়া হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে মন্দিরের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর হিডকোর তদারকিতে শুরু হয়েছিল সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ। ডিসেম্বরে ১২৮ কোটি টাকার পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা বেড়ে ২০০ কোটি হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে।
এ দিন নারকেল ফাটিয়ে মন্দিরের নির্মাণকাজের সূচনা করেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, জেলা সভাধিপতি দেবব্রত দাস। উপস্থিত ছিলেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল, রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায়। প্রস্তাবিত মন্দিরের মডেলও প্রকাশ করা হয় এ দিন। মৎস্যমন্ত্রী জানান, কাজের যা গতি তাতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে জগন্নাথধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ। মুখ্যমন্ত্রীই প্রথমে এসে পুজো দেবেন সেখানে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, জেলার মানুষের জন্য খুশির খবর। পুরীর আদলে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে উঠছে। এতে দিঘার অনেক কিছুই বদলে যাবে। রাতারাতি দ্বিগুণ হয়ে যাবে দিঘার পর্যটক সমাগম।