পূর্ব মেদিনীপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হলদিয়ার কুকড়াহাটিতে চালু হল গঙ্গাসাগর মেলার পরিষেবা কেন্দ্র (Gangasagar Mela Service Centre)। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কুকড়াহাটি জেটিঘাট চত্বরে ঢোকার মুখে পুণ্যার্থীদের জন্য চালু করা হয়েছে এই পরিষেবা কেন্দ্রটি। সোমবার বিকেলে রাজ্যের দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও মানস ভুঁইয়া এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। পুণ্যার্থীদের হাতে শুকনো খাবারের প্যাকেট, কম্বল, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ও জলের বোতল তুলে দেন তাঁরা। এছাড়া কোভিড পরীক্ষাও করানো হয়। অক্সিজেন সিলেন্ডার, অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবা ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চালু থাকবে ।
ওমিক্রন উদ্বেগের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের শর্তসাপেক্ষ ছাড়পত্রে এবার গঙ্গাসাগর মেলা হচ্ছে। তা মাথায় রেখেই এ বছর একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বিহার, ওডিশা, ঝাড়খন্ড-সহ দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বহু পুণ্যার্থী জলপথেও সাগরযাত্রা করছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে সেচমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই এই পরিষেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় কোনও খামতি নেই। পুণ্যার্থীদের পরিষেবা দেওয়া থেকে শুরু করে সাগরযাত্রার সম্পূর্ণ ব্যবস্থাই করা হচ্ছে। এছাড়াও নির্দিষ্ট ভেসেল ও বাকি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকছে। কোনও পুণ্যার্থীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।”
সদ্যই, গঙ্গাসাগর মেলায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে প্রথম যে অর্ডার দিয়েছিল হাইকোর্ট, তাতে বড়সড় বদল ঘোষণা হয়েছে ইতিমধ্যে। গোটা গঙ্গাসাগর এলাকাটাই এখন ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ অর্থাৎ যেখানে রাজ্যের বিধি কায়েম হতে পারে যে কোনও সময়ই।
মঙ্গলবার, হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে গোটা গঙ্গাসাগর এলাকাটাই নোটিফায়েড এরিয়া। অর্থাৎ সেখানে রাজ্য সরকারের যে বিশেষ বিধিবদ্ধ নিয়ম রয়েছে, সেটা মান্যতা দিতে হবে। আগে কেবল কপিলমুনি আশ্রম চত্বরটি ‘নোটিফায়েড’ বলে ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছিল। এ বার গোটা দ্বীপটিকে ‘নোটিফায়েড’ ঘোষণা করার নির্দেশ দিল আদালত। সর্বোচ্চ ৫০ জন তাতে গোটা দ্বীপে জমায়েত করতে পারেন। কিন্তু, তা না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে মেলা।
পাশাপাশি আদালতের তরফে আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলায় আদালতের শর্ত মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখবে দুই সদস্যের কমিটি। জোড়া টিকা ও শংসাপত্র না থাকলে কাউকেই প্রবেশাধিকার নয়। যেকোনও পুণ্যার্থীর ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ আসতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা দেখবেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: School Service Commission: সরিয়ে দেওয়া হোক SSC চেয়ারম্যানকে, রাজ্যকে পরামর্শ হাইকোর্টের