হলদিয়া: মঙ্গলবারের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর আজ, বুধবারও সচল রয়েছে হলদিয়া আইওসিএল-এর শাটডাউনের কাজ । সকাল থেকে শাটডাউনে কর্মরত শ্রমিকদেরকে কারখানায় প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। তবে কালকের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কিছুটা হলেও আতঙ্কে কর্মীরা। এদিন দুপুর বারোটা নাগাদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখবেন এবং শ্রমিক স্বার্থে IOCL কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সেফটি সিকিউরিটি নিয়ে আলোচনা করবেন।
মঙ্গলবার শাটডাউনের কাজ চলার সময় বড়সড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে হলদিয়ার আইওসিতে। মঙ্গলবার দুপুর ২ টো ৫০ নাগাদ আইওসি রিফাইনারির ডিএইচডিএস ব্লকের মোটর স্পিরিড কোয়ালিটি আপগ্রেডেশন ইউনিট অর্থাৎ পেট্রল তৈরির ইউনিটের একটি কলামে ওয়েল্ডিং করার সময় ভয়াবহ আগুন লাগে। ওয়েল্ডিংয়ের স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে খবর। সেখানে পেট্রোলিয়ামের মতো দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে আইওসি রিফাইনারির সিনিয়র হিউমান রিসোর্সে অফিসার সর্বানী জানা এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হলদিয়া রিফাইনারির বিভিন্ন প্রধান ইউনিট বন্ধ এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে৷ এমএসকিউ ইউনিটে, শাটডাউন কাজের সময় দুপুর প্রায় ২টো৫০ নাগাদ একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক কারণটি একটি ফ্ল্যাশ ফায়ার বলে মনে হচ্ছে। ঘটনার সময় কর্মরত ৪৪ জন শ্রমিক আগুনে অল্পবিস্তর দগ্ধ হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৩ জন। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হলদিয়া রিফাইনারির হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত এবং গুরুতরদের দ্রুত স্থানান্তরের করে নিয়ে যেতে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি সবুজ করিডোর চালু করা হয়। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, চলতি মাস থেকেই সমস্ত উৎপাদন বন্ধ রেখে কারখানায় সার্বিক মেরামতির কাজ চলছে। এই কাজের জন্য প্রায় ৪ হাজার অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। প্রায় ৪৮দিন ধরে চলবে এই কাজ। সেই কাজ চলার পাশাপাশি এদিনই কারখানার ভিতরে একটি অগ্নিনির্বাপক মহড়া চলছিল। আকস্মিক কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে তা মোকাবিলা করা যায় তারই মহড়া চলছিল। এরই পাশাপাশি বিভিন্ন অংশে চলছিল মেরামতির কাজও। তার মাঝখানেই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নিনির্বাপক মহড়া শেষ হওয়ার ঘন্টাদেড়েক বাদে ঘটে এই দুর্ঘটনা।
দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, মৃতদের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। কী কারণে এই আগুন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা আহত হয়েছে তারা ঠিকা শ্রমিক বাইরের থেকে এসেছেন। ‘আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাঁদের পরিবারের লোকজন।