পাঁশকুড়া: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির (Akhil Giri) করা মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল (TMC) আগেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ওই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে সেই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পথে নামলেন শাসক দলেরই এক নেতা। মূলত আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে পথে নেমেছেন বলে দাবি করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান কালীপদ মাজি। তাঁর দাবি, আগে রাষ্ট্রপতি পরে মন্ত্রী, আগে দেশ পরে দল। তাঁর এই পদক্ষেপ সম্পর্কে বিজেপির মন্তব্য, কালীপদ মাজির শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাওয়ার পরও কেন পঞ্চায়েত প্রধান এমন একটি সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূল নেতারা।
সোমবার কারা দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের প্রতিবাদে নামে আদিবাসী সংগঠনের লোকজন। আর সেই দলে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান কালীপদ মাজি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা। ছিলেন বিজেপি ও বাম শিবিরের অনেক সদস্যও।
সোমবার ‘জয় ভূমিজ জয় মুন্ডা’ নামে একটি আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরাই মূলত মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। স্থানীয় বেনেগলেসা থেকে রাতুলিয়া বাজার পর্যন্ত ওই মিছিল হয়, মিছিল থেকে অখিল গিরিকে গ্রেফতারির দাবি ওঠে।
কালীপদ মাজি বলেন, ‘যিনি ভুল করেছেন, সেটা তাঁরই সবার আগে বোঝা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী কেন তাঁর জন্য ক্ষমা চাইবেন?’ তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন আর সেই রাষ্ট্রপতি আদিবাসী। তাই এ ক্ষেত্রে সরব হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় আছে। আজ রাজনীতি করছি, কাল নাও করতে পারি। কিন্তু আদিবাসীদের তো আমি প্রাধান্য দেবই।’ এই মিছিলে যে বাম ও বিজেপির সদস্যরা ছিলেন, সেকথাও স্বীকার করেছেন কালীপজ মাজি। দল যদি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তাতে কোনও আপত্তি নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূলেও কিছু ভাল মানুষ রয়েছেন। তাঁরা এই ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না। কালীপদ মাজির শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলেই উনি রাষ্ট্রপতির অপমানের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন।’ কালীপদ মাজি সমাজের চাপে পড়েই মিছিলে হেঁটেছেন। বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তবে এই ঘটনায় কিছুটা অস্বস্তিতে শাসকদল। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘আমাদের দলের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তারপর আমাদের দলের কোনও নেতার এই বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। এমন কেন হল, সে বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখব আমি। আর দলকে রিপোর্ট পাঠাব। এরপর রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে।’