Moyna: ‘দিনে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা শুধু পুলিশকেই দিতে হয়’, বিধায়কদের সামনেই ব্যবসায়ীদের বিস্ফোরক অভিযোগ
Fish Business: দু'মাস আগে নদিয়ার নবদ্বীপে গৌড়ীয় মঠে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর সামনেও একই কথা বলেছিলেন তাঁরা। তারও আগে তারকেশ্বরে সংগঠনের প্রোগ্রামে পুলিশের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচের বিষয়টি উত্থাপন করেন ব্যবসায়ীর। কিন্তু, অবস্থার কোনও বদল ঘটেনি বলেই অভিযোগ।

ময়না: তাজা মাছ গাড়ি করে বাজারে নিয়ে যেতে গেলে পুলিশকে টাকা দিয়ে হয়। একটু-আধটু নয়, লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে হয় বলে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন পূর্ব মেদিনীপুরের মাছ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশকে দৈনিক সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দিতে হয়। শুধু মাছ নয়, মাছের খাবারের গাড়ি আনার পথেও একইভাবে টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজ্য বিধানসভার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সামনে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন ময়নার মৎস্য ব্যবসায়ী পিন্টু দাস। তিনি ময়না ‘ফিস ফার্মার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদকও। তাঁর অভিযোগকে এদিন সমর্থন করেন একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিদিন ময়না থেকে অন্তত ৫০০ মাছের গাড়ি রাজ্যের নানা প্রান্ত ছাড়াও বিহার এবং ওড়িশায় রওনা দেয়। অভিযোগ, গাড়ি পিছু প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকা করে পুলিশকে দিতে হয়। ময়না বাইপাস থেকে তমলুকের নিমতৌড়ি পর্যন্ত চার জায়গায় পুলিশকে ‘সন্তুষ্ট’ করতে হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ আনুখা গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী পিন্টুর বক্তব্য কার্যত চমকে যান ওই স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। বিষয়টি বিধানসভায় তুলবেন বলেও তাঁরা আশ্বস্ত করেন তাঁরা। দু’দিনের সফরে বিধানসভার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পৌঁছয়। ওই টিম ময়নায় পৌঁছয় বৃহস্পতিবার।
কমিটিতে চেয়ারপার্সন তথা চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান ছাড়াও সদস্য হিসেবে পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, কোচবিহার উত্তরের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে প্রমুখ আছেন। কমিটির সদস্যরা ময়নার বিডিও অফিসে ফিস ফার্মার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে সংগঠনের সম্পাদক পিন্টু বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছ সরবরাহ করে ময়না। দুঃখের বিষয় হল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা সত্ত্বেও আমরা সরকারের কাছ থেকে সেভাবে সাহায্য পাচ্ছি না। প্রতিদিন ময়না থেকে ৫০০টি গাড়ি ভর্তি মাছ এরাজ্য ছাড়াও বিহার, ওড়িশা ও অসমে যায়। প্রতিদিন প্রতিটি গাড়ির জন্য আড়াই হাজার টাকা পুলিশকে দিতে হয়। ৫০০ গাড়ির জন্য দৈনিক আমাদের সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা পুলিশকে দিতে হয়।
দু’মাস আগে নদিয়ার নবদ্বীপে গৌড়ীয় মঠে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর সামনেও একই কথা বলেছিলেন তাঁরা। তারও আগে তারকেশ্বরে সংগঠনের প্রোগ্রামে পুলিশের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচের বিষয়টি উত্থাপন করেন ব্যবসায়ীর। কিন্তু, অবস্থার কোনও বদল ঘটেনি বলেই অভিযোগ।
এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরী বলেন, “রাজ্যের স্ট্যান্ডিং কমিটিকে বলেছে কি না, আমি খোঁজ নিয়ে তারপর বলতে পারব।” রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের কথা শুনে তীব্র কটাক্ষ করেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। জেলার পুলিশকর্তারা এই অভিযোগ নিয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি।
