পূর্ব মেদিনীপুর: রবিন মান্না খুনের তদন্তে নন্দীগ্রামে আরও এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল সিআইডি। বুধবার নন্দীগ্রামের বাড়ি থেকে ইন্দ্রজিৎ প্রধান নামের ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার হলদিয়া আদালত ধৃতের জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। বিধানসভা ভোট পর্বে ২৭ মার্চ আক্রান্ত হয়েছিলেন তৃণমূলকর্মী রবীন্দ্রনাথ মান্না।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
ভোট পর্যায়ে নন্দীগ্রামের বয়ালে হামলায় জখম তৃণমূল কর্মী রবীন্দ্রনাথ মান্না। গত ২৭মার্চ রবীন মান্না-সহ তিনজন তৃণমূল কর্মীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত হন রবীন্দ্রনাথ মান্না। তাঁর বুকে পিঠে গুরুতর চোট লাগে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রবীন মান্নাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা ১৪ দিন ধরে সেখানেই চলে লড়াই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক জনসভায় তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারের মধ্যেই রবীন মান্নার বাড়ি যান। প্রচারের সময়েই এক সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমার ছেলেকে এমন মেরেছে সে বাঁচবে কিনা জানি না। আমার স্বামীকে ভিক্ষে দাও বলে শাড়ির আঁচল পেতেছিল রবীন মান্নার স্ত্রী।” ঘটনায় শেখ সুফিয়ান অভিযোগ করেন, ‘বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে। বার বার পুলিশের কাছে তাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা হয়নি৷’ শাসকদলের তরফ থেকেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়।
১৪ দিন ধরে এসএসকেএম হাসপাতালে টানা লড়াই করেন রবীন্দ্রনাথ মান্না। তারপর গত বছর এপ্রিলের ৯ তারিখ মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। কলকাতা থেকে দেহ নন্দীগ্রামে নিয়ে যাওয়ার পর বিক্ষোভ অবস্থানে বসে তৃণমূল। ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি।
ঘটনার প্রথমেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মূল অভিযুক্ত রাধা গোবিন্দ দাস অধরাই ছিল। তিন মাস পর জুলাই মাসের ৯ তারিখে হাঁড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় রাধা গোবিন্দকে। সিআইডি গ্রেফতার করে তাকে। এই ঘটনায় তৃণমূল-বিজেপি কাদা ছোড়াছুড়ি হয় প্রচুর। গ্রেফতার করা হয় শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ মিঠুন নামে সক্রিয় এক বিজেপি কর্মীকেও। তবে কী কারণে রবীন্দ্রনাথকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে, তা নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা।
তদন্তে নেমে এ নিয়ে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করল তারা। তাদের মধ্যে জামিনে মুক্ত ৫ জন। আরও অনেকে এখনও অধরা রয়েছে। জেলার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে শাসকদলের একের পর এক দাপুটে নেতাকে গ্রেফতারের জন্য। তাই হয়তো এমন তৎপরতা দেখাচ্ছে সিআইডি বলেই মত।
আরও পড়ুন: বিধানসভার পর পুরনিগমের নির্বাচনেও কেন পরাজয়? তথ্য-তালাশে বিজেপি