পূর্ব মেদিনীপুর: সেচ দফতরের ড্রেন। সেই ড্রেনের ওপর স্লাব পেতে ঢালাই করে তৈরি হচ্ছে পাকা বাড়ি। অবৈধ নির্মাণ, কাটমানি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতেই সরকারি ড্রেনের ওপর পাকা বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠছে বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। কিন্তু খবর হতেই বিডিও তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ জুন এক ব্যক্তি নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া বাজারের পাশে যে সরকারি ড্রেন রয়েছে, সেই ড্রেনের ওপরে অবৈধ ভাবে পাকা নির্মাণ চলছে। অভিযোগ, বর্তমান প্রধান কাটমানি নিয়ে এই কাজে প্রত্যক্ষ মদত দিচ্ছেন অর্থের বিনিময়ে যার কারণে নিকাশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, অবৈধ ভাবে ড্রেনের ওপরে বাড়ি বানাচ্ছেন অনন্ত মণ্ডল ও বুলাশ্যাম মণ্ডল। তাঁরা নন্দীগ্রামের সোনাচুড়ার বাসিন্দা। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিক নোটিস জারি করেন। দুই অভিযুক্তকে কাজ বন্ধ করে ২ জুলাই ব্লক অফিসে আসার নির্দেশ দেন বিডিও। সোনাচূড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায় আস্ত ড্রেনের ওপরেই চলছে পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ।
দুই অভিযুক্তের এক অভিযুক্ত অনন্ত মণ্ডলের দেখা পাওয়া যায়নি। অপর এক অভিযুক্ত বুলাশ্যাম মণ্ডল নিজেকেই চিনতে পারলেন না। ক্যামেরা দেখে তিনি বললেন তাঁর নাম বুলারাম মাইতি। অবৈধ নির্মাণ তিনি করাচ্ছেন না । তিনি ব্লক থেকে কোন নোটিস পাননি। তাঁর বক্তব্য, “আমাকে এসব কথা বলবেন না। আমি এসবের কিছুই জানি না।”
প্রসঙ্গত, বাজারেই তাঁর একটি দোকান রয়েছে। বাজারের অন্যান্য দোকানদাররা তাঁকে বুলাশ্যাম মণ্ডল বলেই চিহ্নিত করেছে। স্থানীয় দোকানদারদের দাবি অঞ্চলটি বিজেপির দখলে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিজেপির বুলাশ্যাম মণ্ডল বিজেপি সমর্থক হওয়ায় তাঁকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছেন অঞ্চল প্রধান। অবৈধ নির্মাণে মদত দিয়েছেন।
নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ জানাচ্ছেন, সোনাচূড়া বাজারের ওই এলাকায় তৃণমূল যখন ক্ষমতায় ছিল সেই সময় মাছের বাজার তৈরি করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন ক্ষমতায় বিজেপি ড্রেনের ওপরে জবরদস্তি করে ব্যক্তি মালিকানায় পাকা বাড়ি নির্মাণ করাচ্ছে । বিজেপি প্রধান কাটমানি নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে নির্মাণ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সোণাচূড়া অঞ্চল প্রধান শিউলি রানি পাত্র দাস জানান, তৃণমূলের অভিযোগ মিথ্যে, তিনি কোনও কাটমানি নিয়ে কাউকে বসার অনুমতি দেননি। অপরদিকে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ মাইতির বক্তব্য,
“তৃণমূল অঞ্চলে ক্ষমতায় ছিল এবং অবৈধ নির্মাণের অনুমতি তৃণমূলই দিয়েছিল, বরং বিজেপি উদ্যোগ নিয়ে অবৈধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে প্রশাসনকে।”