ময়না: তিনি জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান। ময়নায় এসেছিলেন এক বিজেপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ছানবিন করতে। ময়নার অকুস্থল ঘুরে জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদারের প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘পুলিশের নেতৃত্বেই খুন’। তাঁকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ময়নার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারাও। তাঁদের হাতে ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা। তাঁরা ব্যক্ত করতে চাইছিলেন, গ্রামে তাঁরা কতটা বঞ্চিত। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের গলাতে উঠে এল বাংলার ভোটব্যাঙ্কের কথা। অরুণ হালদার বলেন, “বাংলার ২২ শতাংশ মানুষ তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ, যাঁরা ভোট দিয়ে ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছেন। তাঁদের সেফ গার্ড করার দায়িত্ব ওঁর। এই কমিশন ভারতের তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। আমি এর সিবিআই তদন্ত চাইব।”
রাজনৈতিক পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভা নির্বাচনে তমলুক আসনেই তৃণমূলের দিব্যেন্দু অধিকারী জিতেছিলেন ১,৯০,১৬৫ ভোটে। শতাংশের বিচারে বিজেপি ভোট পেয়েছে ৩৭ শতাংশের মতো। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি।
পরবর্তীতে দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য তমলুকের হিসাবও বদলে যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তমলুকে বিজেপি পিছিয়েছিল মাত্র ২১ ভোটে। সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৭,১৪,৩৯৮টি। সেখানে বিজেপির প্রাপ্তি ৭,১৪,৩৭৭ ভোট। দুই দলের ভোটপ্রাপ্তির হার যথাক্রমে ৪৬ শতাংশ এবং ৪৫.৯ শতাংশ। মানে এক্কেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আর তারপর লোকসভা নির্বাচন। এই আসনটিতে অধিকাংশ মানুষই তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত। তাই এই ‘খুন’ রাজনৈতিক সমীকরণেও একটা বড় ফ্যাক্টর, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই। জাতীয় কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ময়নার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সংগ্রাম দোলই বলেন, “ওঁ ওঁর মতো বলেছেন। সেটা নিয়ে আমার এখন কিছু বলার নেই।” কথা বলতে চাননি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শাজাহাল আলি।