পূর্ব মেদিনীপুর: গত ১৬ মে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল এগরার খাদিকুল। বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ প্রাণ কেড়েছিল ১১ জনের। তিন মাসের মধ্যে আবারও ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। সেই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ গেল ৭ জনের। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের রবিবারের নীলগঞ্জ যেন তিন মাস আগের খাদিকুল! দত্তপুকুরের বিস্ফোরণের খবরে কী বলছেন খাদিকুলের বাসিন্দারা? সকলেই এক কথায় দুষছেন প্রশাসনকে। ‘খাদিকুল থেকে প্রশাসন কোনও শিক্ষাই নিল না’, বলছেন খাদিকুলের মানুষ।
গত ১৬ ই মে আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায় গ্রামে। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা ঢেকে যায় সাদা ধোঁয়ায়। ঘটনাস্থলে ছিন্নভিন্ন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল তখন। সব বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, এত বড় ঘটনা চাপতে চেষ্টা করছে সরকার। খাদিকুল বিস্ফোরণের এনআইএ তদন্তে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে অবশ্য পুলিশ এফআইআর দায়ের করলেও দেখা যায়, তাতে বিস্ফোরক আইনের কোনও ধারা দেওয়া হয়নি। এই ধারা না থাকলে কোনও তদন্ত এনআইএকে হস্তান্তর করা যায় না।
খাদিকুলের বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিলেন মাধবী বাগ। তাঁর দেওর মনোজ বাগ দত্তপুকুরের ঘটনার কথা শুনে কিছুটা স্তম্ভিত। বলেন, “সরকারের তরফ থেকে এসব বন্ধ করুক। এভাবে চললে তো এলাকার পর এলাকা শেষ হয়ে যাবে। আমাদের এখানে ১১ জন মারা গেল। ওখানেও শুনছি ৭ জন মারা গিয়েছে। মন্ত্রী এলেন, বললেন লাইসেন্স হবে। কিসের লাইসেন্স কিছুই বুঝিনি। আর সরকারের তরফে এখনও কিছু আসেওনি।”
এলাকার বাসিন্দা অরুণকুমার সিংয়ের কথায়, “প্রশাসন যদি সক্রিয় না হয় কখনওই এটা আটকানো যাবে না। তারা সক্রিয় নয় বলেই তো এখনও বাজি কারখানা চলছে।” একই সুর নন্দন মাইতি নামের আরেক এলাকাবাসীর গলাতেও। তিনি বলেন, “প্রশাসনের দায়িত্ব, ওরাই তো যা করার করবে। আমাদের হাতে তো আর কিছু নেই। এখানে ১১ জন মারা যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীও এসেছিলেন। হোমগার্ডের চাকরি হয়েছে। এরপর আর কিছুই হয়নি। বলা হয়েছিল, গ্রিন ক্র্যাকার্স লাইসেন্স দেওয়া হবে, কিছু বেকাররা কাজ পাবে। কিছুই শুনি না আর।” সাহাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান পুষ্পরাণি সাউ মাইতির বক্তব্য, “প্রশাসন ঠিকঠাক নজরদারি চালালে এমনটা হত না। শাসকদল একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখতে পারত। তাদের নজর নেই বলেই তো দিনের পর দিন এই ঘটনা বাড়ছে।”