Harassment and Murder Case: ফাঁসিয়ে দিয়েছিল বান্ধবী, মিলেছিল ওড়না জড়ানো লাশ, ১০ বছর পর মিলল বিচার
Harassment and Murder Case: জানা গিয়েছে, মামলা চলাকালীন বারবার বাধা এসেছে। প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠেছে। বুধবার তমলুক জেলা ও দায়রা আদালত তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করার পরও মৃত নাবালিকার বাবা সেখানে থাকতে পারেননি। হুমকির ভয়ে আদালতে গিয়েও গোপন জায়গায় রায়ের অপেক্ষায় বসেছিলেন তিনি।
পূর্ব মেদিনীপুর: ১০ বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল ওই কিশোরীর। হঠাৎ একদিন বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল সে। হন্য হয়ে খোঁজার পর মিলেছিল পিছমোড়া করা, ওড়না জড়ানো দেহ। শিউরে উঠেছিল পরিবার। মেয়ের এমন অবস্থা কারা করেছে, খুঁজতে গিয়েজানা গিয়েছিল বান্ধবীর কারসাজিতেই ঘটেছিল এমন ঘটনা। গণধর্ষণ, খুন এবং পকসো আইনে মামলা চলছিল দীর্ঘ ১০ বছর ধরে। মামলা লড়তে নিজের সম্বলটুকু বিক্রি পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন বাবা। অবশেষে মিলল বিচার। সাজা ঘোষণা করল তমলুক জেলা ও দায়রা আদালত। তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার সাজা ঘোষণা করেন বিচারক রীনা সাউ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার খশুরুই গ্রামের বাসিন্দা শেখ রফিজুল, উকিল আলি ও বিশু ঘোড়াইকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুন এবং পকসো আইনে মামলা রুজু হয়েছিল। এছাড়া অভিযুক্ত বান্ধবীর বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে মামলা চলছে। সাজা ঘোষণার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে রাজ্যের ফান্ড থেকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মোট ২৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন এই মামলায়। জানা গিয়েছে, মামলা চলাকালীন বারবার বাধা এসেছে। প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠেছে। বুধবার তমলুক জেলা ও দায়রা আদালত তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করার পরও মৃত নাবালিকার বাবা সেখানে থাকতে পারেননি। হুমকির ভয়ে আদালতে গিয়েও গোপন জায়গায় রায়ের অপেক্ষায় বসেছিলেন তিনি।
২০১৪ সালের ঘটনা। ওই বছর ১১ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পটাশপুর থানার খড়াই কোটবাড় গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়ে যায়। তার বান্ধবী ওই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ছিল পরিবারের। এরপর রাত পর্যন্ত মেয়ে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু, সন্ধান মেলেনি। বান্ধবীকে চাপ দিতেই সে জানায়, তিনজন যুবক তার বান্ধবীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে বেলদা থানা এলাকায় এক অজ্ঞাত পরিচয় ছাত্রীর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারে পুলিশ। খবর পেয়ে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাবা এবং দাদা বেলদা থানায় পৌঁছে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, ওই দেহ তাদের মেয়ের। পিছমোড়া করে দুই হাত বাঁধা ছিল। দুই পা-ও বাঁধা ছিল। মুখে ওড়না জড়িয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেহটি পড়েছিল।
পরে জানা যায় ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল শেখ রফিকুল। তাতে রাজি ছিল না সে। সেজন্য প্রতিশোধ নিতে সঙ্গী উকিল আলিকে নিয়ে একটি প্রাইভেট গাড়িতে ওই নাবালিকার গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল রফিকুল। গাড়ির চালক ছিল বিশু ঘোড়াই।