পাঁশকুড়া: ওড়িশায় রাজ্যের শ্রমিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে বেলাগাম অত্যাচার চলছে। এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তিনশোরও বেশি শ্রমিক ও ব্যবসায়ী ওড়িশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বুধবার ওড়িশা ফেরত একদল শ্রমিক পাঁশকুড়া থানায় স্মারকলিপি দেন। পাশাপাশি তাঁরা বিডিও অফিসে গিয়েও এনিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। ‘বাংলা বাঁচাও কমিটি’ তৈরি করে ওড়িশা ফেরত ওই শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন ইতিমধ্যে। সেই দাবিতে তাঁরা পাঁশকুড়া বিডিও অফিসে স্মারকলিপি দেন। এরাজ্যের শ্রমিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
পাঁশকুড়া থানার সাধুয়াপোতা গ্রামের আশাদুল শাহ, রাধাবল্লভচক গ্রামের শেখ সামাদ আলি পাঁশকুড়া থানায় ও বিডিও অফিসে যান । শেখ সামাদ বলেন, “আমরা ওড়িশায় ব্যবসা করতাম। কিন্তু, বাংলাদেশে ঝামেলার পর ওড়িশায় আমরা টার্গেট হই। আমাদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে সেখানে অত্যাচার করা হয়। আধার কার্ড দেখালে সেই আধার কার্ড জাল বলে ছিঁড়ে দেয়। বাংলাদেশি রোহিঙ্গা তকমা দাগিয়ে প্রচণ্ড মারধর করা হয় আমাদের। বাধ্য হয়ে ফিরে এসেছি। এখন আমরা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চাইছি। আমরা যদি ওড়িশায় ফিরে যেতে না পারি ।”
এ রাজ্যের পড়শি এলাকা ওড়িশা। বিশেষ করে চন্দনেশ্বর, বালেশ্বর, জলেশ্বর, কটক ভুবনেশ্বর, গুঞ্জাম, ধামরা বন্দর সহ রউরকেল্লা ও সমগ্র ওডিশা জুড়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি, কাঁথি, দেশপ্রাণ, রামনগর, এগরা সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্ডার এলাকাগুলির বহু মানুষ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে যাতায়াত ও বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিশেষ করে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজন কটক, ভুবনেশ্বর, এইমস সহ হাসপাতালগুলিতে রোগী নিয়ে যাতায়াত করছেন। এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য এলাকায় ঘর ভাড়া করে থেকে যেতে হচ্ছে। প্রায় হাজার হাজার মানুষ রুটি-রুজির জন্য রয়েছে ওখানে। সেখানে পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন তাঁরা।
পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুজিত রায় বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের প্রতিবেশী রাজ্যে এমনটা ঘটছে। কিছুদিন আগেই সরকার পরিবর্তন হয়েছে। পাঁশকুড়ার পাঁচ সাত হাজার মানুষ বিভিন্ন পেশায় ওই রাজ্যে কাজ করেন। কিন্তু ওখানে এরকম ঘটনা ঘটছে। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন। ওড়িশা সরকার যাতে বিষয়টায় নজর দেয়।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)